আল্লামা সাইয়্যিদ আবু বকর মক্কী আদ দিমইয়াতী আশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত “ইয়ানাতুত ত্বলেবীন” কিতাবে বর্ণনা করেন, শাসক আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের শাসনামলে শামদেশের এক সুদর্শন যুবক সে ঘোড়ায় চড়ে খেলতেছিল। একদিন হঠাৎ সে তার ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যায়। অতঃপর ঘোড়ার পিঠে উঠলে ঘোড়াটি তাকে নিয়ে শাম দেশের পথে চলতে শুরু করে। ঘোড়াটিকে সে থামাতে সক্ষম হচ্ছিল না। অতঃপর ঘোড়াটি শাসকের দরজায় গিয়ে উপনীত হলো। তখন শাসকের এক ছেলে ঘোড়ার সামনে চলে আসলো এবং শাসকের ছেলেটিও ঘোড়াটিকে ফিরিয়ে রাখতে সক্ষম হলো না বরং সে ঘোড়ার দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং নিহত হয়।
এই সংবাদ শাসকের নিকট পৌঁছলে শাসক উক্ত যুবককে তার দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ করলো। শাসকের আদেশ যখন তার প্রতি ঘোষণা করা হলো, সেটা কঠিন বিপদ মনে করে সেই যুবক বললো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে আমি বড় করে ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করবো এবং তা (প্রতিবছর) জারী রাখবো।
অতঃপর সেই যুবক শাসকের সমীপে উপস্থিত হলো এবং তার দিকে দৃষ্টি দিল। তখন হত্যা করার গোস্বা সত্ত্বেও শাসক হেসে দিল। অতঃপর বললো, হে ব্যক্তি! তুমি কি জাদু করো? সে বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি জাদু করি না। অতঃপর শাসক বললো, আমি তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম। অতএব, তুমি যা বলার তা আমাকে বলতে পারো।
তখন সেই যুবক বললো, আমি নিয়ত করেছিলাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে ওলীমা মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো এবং প্রতিবছর তা জারী রাখবো।
অতঃপর শাসক পুনরায় বললো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাকে সুমহান নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা হাদিয়া করলাম এবং আমার ছেলের হত্যার অপরাধ থেকেও মুক্তি দান করলাম।
যুবক শাসকের দরবার থেকে মৃত্যুদ-ের শাস্তি থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বের হলো এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বরকতে এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা গ্রহণ করলো। এ বিষয়টি যখন প্রকাশিত হলো, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য সেই যুবকের ভাইরা মনযোগী ও আগ্রহী হলো।” (ইয়ানাতুত ত্বালিবীন: ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা নং ৬১৩)
অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ত করার কারণে মৃত্যুদ- হতে মুক্তি লাভ হয়। সুবহানাল্লাহ! দেখা যাচ্ছে, পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারীরা দুনিয়াতেই সুসংবাদ লাভ করছেন, অপরিসীম ফায়দা লাভ করছেন। সুবহানাল্লাহ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন