>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

ঈদে মীলাদর বিরোধীতাকারীর মৃত্যুর পর কঠিন পরিণতি

 ঈদে মীলাদর বিরোধীতাকারীর মৃত্যুর পর কঠিন পরিণতি



একসময় বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের এক সময়কার খতিব ছিলেন ওবায়দুল হক। তিনি সব সময় ঈদে মীলাদুন্নবীর বিরোধীতা করতেন। ঈদে মীলাদুন নবী আসলেই বলতেন, ” ঈদে মিলাদুন্নবি বিদয়াত ” । নাউযুবিল্লাহ।
অপরদিনে হিন্দুয়ানী পহেলা বৈশাখ আসলে তার পক্ষে বলতেন। বলতেন- “আল্লাহর বহু বড় নিয়ামত হলো নববর্ষ। নববর্ষ পালন করতে গিয়ে দান-খয়রাত করতে হবে শুকরিয়া আদায় করতে হবে দোয়া করতে হবে।” নাউযুবিল্লাহ।
( তথ্যসূত্র: দৈনিক মানবজমিন ১০/০৪/২০০৪ ইং শেষ পৃষ্ঠা)
ওবায়দুল হকের এ ভুল ফতওয়ার কারণে মৃত্যুর পর এক অদ্ভূত ঘটনা ঘটেছিলো। প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, মৃত্যুর সাথে সাথে তার লাশের অস্বাভাবিক পচন ধরেছিলো। পচন ঠেলাতে লাশকে চর্তুপাশ থেকে বরব দিয়ে ঢাকা হয়, এমনকি তার লাশকে বরফের বিছানার উপর রাখা হয়। তারপরও পচন-দুর্গন্ধের কারণে টেকা সম্ভব হচ্ছিলো না। শুধু দুর্গন্ধ নয়, লাশের অস্বাভাবিক বিকৃত ঘটেছিলো। তার পেট এত বড় হতে থাকে, অনেকেই ধারণা করেছিলো তার পেট হয়ত ফেটে যাবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা এ ধরনের ভুল ফতওয়া দেওয়ার হাত থেকে আমাদের আলেম সমাজকে হেফাজত করুন।
ঈদে মিলাদুন্নবীর ও হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানমান এর বিরোধীতাকারীর চেহারার বিকৃতি ।
যারা আল্লাহ পাকের হাবীবের শান-মান এর খিলাপ কথা বলবে ও ঈদে মিলাদুন্নবির বিরোধীতা করবে তাঁদের পরিনতি এমনই ভয়াবহ হবেই হবে ।

মুহম্মদ বিন আহমদ বিন সাহল রমালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ঈমানদীপ্ত শাহাদাত মুবারক:

 মুহম্মদ বিন আহমদ বিন সাহল রমালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ঈমানদীপ্ত শাহাদাত মুবারক:

No photo description available.
মিশরে এক সময় ছিলো উবাইদি শাসন। এই শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলো উবাইদুল্লাহ মাহদী। সে ছিলো কট্টর শিয়া। তার সম্পর্কে ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, উবাইদুল্লাহ বাতেনি উবাইদিয়াদের প্রথম শাসক। তারা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিবর্তন করেছিলো। নাউযুবিল্লাহ! উবাইদিদের শাসনকালে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীদের উপর নির্মম নির্যাতন ও গণহত্যা চালানো হয়। তারা বিকৃত আক্বীদা প্রচার করতো।
সে সময় মিশরে বাস করতেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আলেম এবং বুজুর্গ হযরত মুহম্মদ বিন আহমদ বিন সাহল রমালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ছিলেন সম্মানিত হাদীছ শরীফ ও সম্মানিত ফিকহের ইমাম। বেশিরভাগ দিন তিনি রোজা রাখতেন। একই সাথে হক কথা বলার ক্ষেত্রে তিনি কাউকে পরোয়া করতেন না। তিনি সব সময়ই এই উবাইদি শিয়াদের ভ্রান্ত আক্বীদা এবং শাসনের বিরোধীতা করতেন। প্রচার প্রসারও করতেন। এজন্য উবাইদিরা সব সময় উনার উপর ক্ষিপ্ত থাকতো।
একদিনের ঘটনা। তৎকালীন মিশরের উবাইদি শাসক আবু তামিম অত্যন্ত রেগে গিয়ে হযরত মুহম্মদ বিন আহমদ বিন সাহল রমালি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে গ্রেফতার করে। আবু তামিমের কাছে সংবাদ এসেছে তিনি উবাইদি শাসনের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছেন।
আবু তামিম উনাকে সামনে রেখে বললো, "আমার কাছে সংবাদ এসেছে, আপনি নাকি সবাইকে বলে বেড়াচ্ছেন, যদি আপনার কাছে ১০টি তীর থাকে তাহলে আপনি একটি রোমানদের বিরুদ্ধে নিক্ষেপ করবেন, আর নয়টি আমাদের বিরুদ্ধে নিক্ষেপ করবেন । এটা সত্য?'
তখন সাহল রমালি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, 'না, আমি এমন কথা বলিনি' তামিম প্রশ্ন করলো, 'তাহলে কী বলেছেন?' শায়খ তার অবস্থান পরিবর্তন করছেন ভেবে খুশি হয়ে উঠে আৰু তামিম সাদ। তখন তিনি বললেন, 'আমি বলেছি যদি আমার কাছে দশটি তীর থাকে, তাহলে আমি নয়টি তোমাদের দিকে নিক্ষেপ করবো এবং দশমটিও তোমাদের দিকেই নিক্ষেপ করবো। কারন তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দ্বীন উনাকে বিকৃত করেছো, নেককারদের শহীদ করেছো, সম্মানিত তাওহীদ উনার আলোকে নিভিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছো। তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তা ও জজবার সাথে এই কথাগুলো বললেন ।
এসব কথা শুনে শিয়া শাসক আৰু তামিম ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে যায়। সে প্রহরীদের আদেশ দেয় উনাকে বন্দী করতে। উনাকে বন্দী করা হলো এবং বন্দীর দ্বিতীয় দিন চাবুক দিয়ে প্রচন্ড প্রহার করা হয়। এরপর একজন ইহুদিকে আদেশ দেয়া হয় জীবন্ত অবস্থাতেই উনার চামড়া শরীর হতে আলাদা করে ফেলতে। উনার হাত পা বেধে ফেলা হয়। ধারালো ছুরি দিয়ে দিয়ে চামড়া আলাদা করতে থাকে ইহুদি। এ সময় হযরত সাহল রমালি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তিলাওয়াত করছিলেন। এ দৃশ্য দেখে পাপিষ্ট ও অভিশপ্ত ইহুদী সে উনার সিনায় ছুরি বসিয়ে উনাকে শহীদ করে দেয়। নাউযুবিল্লাহ! উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারকের পর উনার আলাদা করা চামড়া থেকে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার তিলাওয়াতের শব্দ শোনা যেতে থাকে। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ করে একটি আয়াত শরীফ বার বার শোনা যেতে থাকে তাহলো, ইহা তো সম্মানিত কিতাব মুবারকেই লিপিবদ্ধ আছে। (পবিত্র সূরা বনী ইসরাইল, পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)
উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারকের পর মিশরের আরেক বুজুর্গ হযরত ইবনুশ শাশা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বপ্নে সাহল রমালি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কেমন আছেন? তখন সাহল রমালি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার চাদরে আবৃত্ত করেছেন এবং উনার নৈকট্য হাদিয়া করেছেন এবং বলেছেন আমি যেন সব সময় উনার প্রতিবেশি হয়ে থাকি। সুবহানাল্লাহ!
যুগে যুগে এভাবে হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা নিজের জান- মাল বিলিয়ে নিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শানকে বুলন্দ করেছেন।

All reactions:
3


সৃষ্টির শুরুই হয়েছে ঈদে মিলাদে হাবীবি পালনের জন্য

সৃষ্টির শুরুই হয়েছে ঈদে মিলাদে হাবীবি পালনের জন্য।

 এ সম্পর্কে হাদীছে কুদসী শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে,

كنت كنزا مخفيا فاحببت ان اعرف فخلقت الخلق لاعرف.



অর্থ: “আমি গুপ্ত ছিলাম। আমার মুহব্বত হলো যে, আমি জাহির হই। তখন আমি আমার (রুবুবিয়্যত) জাহির করার জন্যই সৃষ্টি করলাম মাখলূকাত (আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে)।”
দলীল -
আল মাকাসিদুল হাসানা/ ৮৩৮,
কাশফূল খিফা/২০১৩,
আসনাল মুত্বালিব/১১১০,
তমীযুত তীব/১০৪৫,
আসরারুল মারফুআ/৩৩৫,
তানযিয়াতুশ শরীয়াহ ১/১৪৮,
আদ্দুরারুল মুন্তাছিরা/৩৩০,
আত তাযকিরা ফি আহাদীসিল মুশতাহিরা/১৩৬,
সিররুল আসরার, কানযুল উম্মাল)
২. হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্নিত,
عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما أذنب آدم صلى الله عليه وسلم الذنب الذي أذنه رفع رأسه إلى العرش فقال أسألك حق محمد ألا غفرت لي فأوحى الله إليه وما محمد ومن محمد فقال تبارك اسمك لما لما خلقتني رفعت رأسي إلى عرشك فإذا هو مكتوب لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنه ليس أحد أعظم عندك قدرا ممن جعلت اسمه مع اسمك فأوحى الله عز وجل إليه يا آدم إنه آخر النبيين من ذريتك وإن أمته آخر الأمم من ذريتك ولولاه يا آدم ما خلقتك
অনুবাদ-
“ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, হযরত আদম আলাইহিস সালাম যখন দুনিয়াতে তাশরীফ আনেন তখন তিনি সবসময় কান্নাকাটি করতেন। একদিন তিনি আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন, হে আল্লাহ! মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওসীলায় আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তখন ওহী নাজীল হয়- মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আপনি কিভাবে চিনলেন, আপনি তো উনাকে কখনো দেখেননি? তখন তিনি বললেন-যখন আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমার অভ্যন্তরে রুহ প্রবেশের পর মাথা তুলে আমি আরশে লেখা দেখলাম- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেয়ে সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব আর কেউ নেই যার নাম আপনি স্বীয় নামের সাথে রেখেছেন। তখন অহী নাজীল হল-তিনি সর্বশেষ নবী। আপনার সন্তানদের অন্তর্ভূক্ত হবে। যদি তিনি না হতেন, তাহলে আপনাকেও সৃষ্টি করা হতো না।“
রেফারেন্সঃ
★ ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুন নাবায়িয়্যাহ : ৫/৪৮৯ পৃ
★ ইমাম হাকেম নিশাপুরীঃ মুসতাদরাকে হাকেম - ২/৪৮৬ পৃ : হাদিস : ৪২২৮
★ ইমাম হাকেম নিশাপুরীঃ আল মাদখাল : ১/১৫৪
★ তাবরানী : আল মুজামুল আওসাত : ৬/৩১৩ : হাদীস নং-৬৫০২
★ তাবরানী : আল মুজামুস সগীর : ২/১৮২ : হাদীস নং-৯৯২,
★ তাবরানী : মুজমায়ে কবীর’
★ ইমাম দায়লামী : আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২২৭
★ ইমাম আজলুনী : কাশফুল কাফা : ১/৪৬ ও ২/২১৪
★ আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,
★ আল্লামা সুবকী -শেফাউস সিকাম
★ ইবনে আসাকির : নিজ ‘তারিখে দিমাশক’: ৭/৪৩৭ পৃ
★ ইবনুল জাওজী : আল ওয়াফা বি আহওয়ালিল মোস্তফা : ৩৩
★ ইবনুল জাওজী : বয়ানুল মীলাদুন্নবী : ১৫৮
★ ইবনে কাসীর : আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া : ১/১৮ পৃ
★ ইবনে হাজর হায়সামী : মাযমাউজ যাওয়ায়েদ : ৮/২৫৩
★ শিহাবউদ্দীন খাফাজী : ‘নাসীম আর-রিয়াদ’
★ ইমাম সুয়ুতী : কাসায়েসুল কুবরা : ১/১২ : হাদিস ১২
★ ইমাম সুয়ুতী : আদ দুররে মানসুর : ১/১৪২
★ আল্লামা কাসতাল্লানী -আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ : ১/ ৮২ ও ২/৫২৫
★ ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৭২
★ ইমাম হালাবী : সীরাতে হালাবিয়্যাহ : ১/৩৫৫
★ মুহাদ্দিসে শাহ আব্দুল আজিজ দেহলভী : তফসীরে আজিযী : ১/১৮৩
★ ইমাম নাবহানী : শাওয়াহিদুল হক : ১৩৭
★ ইমাম নাবহানী : আনোয়ার-ই-মোহাম্মাদীয়া : ৯-১০
★ ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪
★ ইমাম নাবহানী : হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন : ৩১ পৃ ও ৭৯৫ পৃ
(মাকতুবাত এ তাওফিক হিয়্যাহ, কাহেরা,মিশর)
★ আল্লামা শফী উকারবী : যিকরে হাসীন : ৩৭
★ আশরাফ আলী থানবী : নুশরাত্বীব : ২৮
★ ফাযায়েলে আমাল, ৪৯৭, উর্দু এডিশন
হাদিসের মান পর্যালোচনা :
যে সকল মুহাদ্দিসগন এ হাদিস সহিহ বলেছেনঃ
১) ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ। আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
২) ইমাম তকি উদ্দীন সুবকী বলেন, হাদিসটি হাসান।শিফাউস সিকাম, পেইজ-১২০
৩) ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। দাফউ শুবহাহঃ ১/৭২
৪) ইমাম কস্তল্লানী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ।মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহঃ১/১৬৫
৫) ইমাম সামহুদী বলেন, হাদিসটি সহীহ। ওয়াফাউল ওয়াফাঃ২/৪১৯
৬) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদিসটি বিশুদ্ধ।আল খাসাইসঃ১/৮
৭) ইবনু তাইমিয়্যাহ এ হাদীসটি দলীল হিসাবে তার কিতাবে উল্লেখ করেছে। মাজমাউল ফাতাওয়াঃ২/১৫৯
‘যদি মুহাম্মাদ না হতেন, তবে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না’-এ হাদীসটি উল্লেখ করে বলেছে, এ হাদীসটি পূর্বের কথাকে কথাকে শক্তিশালী করেছে। রেফারেন্সঃ মাজমু উল ফাতাওয়া- ২/১৫৯
৮) বাতিল দের জবাবে ইমাম ইবনু কাসীর পরিস্কার বলেছেন, এই হাদীসটি বানোয়াট নয়। এটা দ্বারা নির্দ্বিধায় দলীল প্রদান করা যাবে।
রেফারেন্সঃআস সীরাতুন নাবাওইয়্যাহ- ১/১৯৫
৯) বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস মুল্লা আলী কারী বলেন, একথাটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ।রেফারেন্সঃ আল আসরারুল মারফুআহ- ১/২৯৫
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-কে বলেছেন, ওহে ঈসা আলাইহিস সালাম! হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতকেও তা করতে বলুন । রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না হলে আমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না, বেহেশত বা দোযখও সৃষ্টি করতাম না।”
রেফারেন্সঃ
★ ইমাম হাকিম নিশাপুরী : আল মোসতাদরেক’ : ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭
★ ইমাম দায়লামী : আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২
★ ইমাম ইবনে সাদ : তানাকাতুল কোবরা
★ ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী : ‘শিফাউস্ সিকাম ৪৫
★ শায়খুল ইসলাম আল-বুলকিনী : ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া ১/১৪০
★ ইবনে হাজর রচিত ‘আফদালুল কোরা
★ আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,
★ ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪ ও ৪/১৬০
★ ইবনে কাসীর : কাসাসুল আম্বিয়া : ১/২৯ পৃ
★ ইবনে কাসীর : সিরাতে নববিয়্যাহ : ১/৩২০
★ ইবনে কাসীর : মুজিজাতুন্নবী (সা) : ১/৪৪১
★ ইবনে হাজর আসকালানি : লিসানুল মিযান : ৪/৩৫৪
★ ইমাম যাহাবী : মিজানুল ইতিদাল : ৫/২৯৯, রাবী নং ৬৩৩৬
★ ইবনে হাজর হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১/৪২
★ ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১২/২২০
★ আবু সাদ ইব্রাহীম নিশাপুরী : শরহে মোস্তফা : ১/১৬৫
★ ইমাম সুয়ুতী : কাসায়েসুল কুবরা : ১/১৪ : হাদিস ২১
★ ইমাম ইবনে হাইয়্যান : ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী : ৩/২৮৭
★ কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২
★ মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১
★ মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১/২৯৫, হাদিস : ৩৮৫
★ ইবনে শামী সালেহ : সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ১২/৪০৩
হাদিসের মান পর্যালোচনা :
★ ইমাম দায়লামী : হাদিসটির মান সনদের দিক থেকে হাসান।
আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২
৪. হযরত সালমান ফারিসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন: “হযূর পূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাছে জিবরীল আমীন আলাইহিস সালাম এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী, ‘(হে রাসূল) আপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আমি সৃষ্টি করি নি। আমি বিশ্বজগত ও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”
রেফারেন্সঃ
★ ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৩/৫১৭
★ মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১
★ ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৮২
★ ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/২৮৯
★ কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/১০৫
৫ : এই হাদিসের ২টা সনদ সহকারে উল্লেখ্য করলাম :
১ম সনদ :
হযরত ইমাম হাকিম নিসাপুরী
হযরত আলী বিন হামশাদ আদল ইমলা রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
হারূন বিন আব্বাস হাশেমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
জানদাল বিল ওয়াকিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি
হযরত আমর বিন আউস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত,
২য় সনদ :
ইমাম হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি
হযরত সাঈদ বিন আবু উরূবাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি , তিনি
হযরত ক্বাতাদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে। তিনি,
সাঈদ বিন মুসাঈয়িব রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত,
-حدثنا علي بن حمشاد العدل املاء هرون بن العباس الهاشمي ثنا جندل بن والق ثنا عمرو بن أوس الانصاريحدثنا سعيد بن ابي عروبة عن قتادة عن سعيد بن المسيب عن ابن عباس رضي الله عنه قال اوحي الله الي عيسي عليه السلام يا عيسي امن بمحمد صلي الله عليه و سلم وامر من ادركه من امتك ان يؤمنوا به فلو لامحمد صلي الله عليه و سلم ما خلقت ادم عليه السلام ولولا محمد صلي الله عليه و سلم ما خلقت الجنة و النار ولقد خلقت العرش علي الماء فضطرب فكتبت عليه “لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه وسلم فسكن. هذا حديث صحيح الاسناد
” মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে ওহী করলেন। হে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ! আপনি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতের মধ্যে উনাকে যারা পেতে চায় তাঁদের নির্দেশ করুন, তাঁরা যেন উনার প্রতি ঈমান আনে।
যদি মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না হতেন হতেন তবে আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করতাম না, যদি মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি না হতেন তবে জান্নাত এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না।
আর যখন আমি পানির উরর আরশ সৃষ্টি করলাম তখন তা টলমল করছিলো, যখনই আরশের মধ্যেلا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم লিখে দেই তৎক্ষণাৎ আরশ স্থির হয়ে যায়।”
এই হাদীস শরীফের সনদ সহীহ।
রেফারেন্সঃ
★ মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাঈন লিল হাকীম নিশাপুরী (রহ),
কিতাব : তাওয়ারীখিল মুতাক্বাদ্দিমীন- যিকরু আখবারী সাইয়্যিদুল মুরসালীন ওয়া খাতামুন নাব্যিয়িন মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব মুছতাফা ছলাওয়াতুল্লাহিআলাইহি ওয়া আলিহীত ত্বহীরিন
খন্ড : ৪র্থ খন্ড ১৫৮৩ পৃষ্ঠা
★ মুখতাছারুল মুসতাদরাক ২য় খন্ড ১০৬৭ পৃষ্ঠা

সম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুহব্বত

 সম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুহব্বত





সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে পরাক্রমশালী এক মুসলিম সিপাহসালার আবু নাসির সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি নামেই যিনি সমধিক মশহুর। ক্রুসেডারদের দখলদারিত্ব থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উদ্ধার করে ইতিহাসে তিনি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। উনার সম্পর্কে যত ইতিহাস গ্রন্থ রয়েছে সবখানেই উনার সম্মানিত জিহাদ, সমরকৌশল, দৃঢ়চেতা মনোভাব ইত্যাদি বিষয়গুলোকেই ফুটিয়ে তোলা হয়ে গেছে। কিন্তু এর বাইরে তিনি যে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দ ছিলেন এবং জিন্দেগীর প্রতিটি ক্ষণেই তিনি সম্মানিত শরীয়ত উনার উপর ইস্তেকামত ছিলেন সে বিষয়ে খুব কমই আলোকপাত করা হয়।
সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পরিপূর্ণরূপে সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদার ছিলেন এবং সম্মানিত শাফেঈ মাযহাব উনার অনুসারী ছিলেন। মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং ফরজ-ওয়াজিব-নফল আমলসমূহ পালনের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সচেষ্ট ছিলেন। এমন কিছু সুন্নত মুবারক রয়েছে যা তিনি উনার জিন্দেগীতে কখনই তরক করেননি। একবার তিনি বলেছিলেন, “বছরের পর বছর গুজার হয়ে গেছে। কিন্তু আমার এক ওয়াক্ত সম্মানিত ছলাতও আমি বিনা জামায়াতে আদায় করিনি।” সুবহানাল্লাহ!
সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক সম্বলিত কবিতা অত্যন্ত পছন্দ করতেন। যা উনার জীবনীলেখক কাজী বাহাউদ্দিন শাদ্দাদের লেখনীতে বিশেষভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তিনি বেশিবেশি পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণ করতেন। যখন কোনো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সামনে বলা হতো তখন তিনি দরবারের সবাইকে নীরব থাকার নির্দেশ দিতেন এবং আদব বজায় রাখতেন। যদি তিনি কখনও শুনতেন যে, কোনো এলাকায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ক্ষেত্রে উচ্চ মর্তবার কোনো শায়েখ অবস্থান করছেন; তিনি তৎক্ষনাৎ সেই শায়েখ উনার কাছে চলে যেতেন এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দরসে উপস্থিত হয়ে তা শ্রবণ করতেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মূল বিষয়বস্তু যদি শিক্ষামূলক এবং উপদেশমূলক হতো তাহলে তিনি তৎক্ষনাৎ শিশুর মতো কান্না করতেন। তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণে এতটাই মাতোয়ারা ছিলেন যে, জিহাদ চলাকালে ময়দানেই তিনি যোদ্ধাদের কাছ থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণ করতেন। সুবহানাল্লাহ!
সপ্তাহের অন্যান্য দিন প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকলেও সম্মানিত ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) তিনি প্রশাসনিক সকল কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। এদিন তিনি বেশি পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি গরীব-মিসকিনদের সাহায্য সহযোগীতা করতেন। বেশি বেশি দান-খয়রাত করতেন। মিশরে অবস্থানকালে কিংবা সামরিক ছফরে থাকা অবস্থায় যেখানেই তিনি থাকতেন সপ্তাহে এই দিন মুবারক তিনি বিশেষভাবে অতিবাহিত করতেন। সুবহানাল্লাহ!
বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়, জিন্দেগী মুবারকে খুব কমবারই উনার পবিত্র যাকাত ফরয হয়েছিলো। কারণ কোনো সময়ই তিনি বেশি পরিমাণ সম্পদ জমা করে রাখেননি। সমস্ত সম্পদ তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পথে খরচ করেছেন। সম্মানিত বিছাল শরীফের সময় তিনি মাত্র একটি দীনার ও ৪৭টি দিরহাম রেখে যান। এছাড়া আর কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তিনি রেখে যাননি।
মূলত, সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কামিয়াবীর মূল রহস্যই হচ্ছেন- উনি সবসময় মূলের দিকে ধাবিত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সম্মানিত শরীয়ত সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে উনারা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতেন। ফলে দুনিয়াবী বিষয়গুলো উনাদের জন্য আসান হয়ে যেতো। সুবহানাল্লাহ!
সূত্র: * আন নাওয়াদিরু’স সুলতানিয়া (কিতাব)

হযরত নূর কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামকরণে তৈরী করা হয়েছিলো ভারতের যে মসজিদ: ফিরেজাবাদে যুগের সাক্ষী ঐতিহাসিক নিদর্শন কুতুব শাহি মসজিদ

 হযরত নূর কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামকরণে তৈরী করা হয়েছিলো ভারতের যে মসজিদ: ফিরেজাবাদে যুগের সাক্ষী ঐতিহাসিক নিদর্শন কুতুব শাহি মসজিদ

#কুতুব_শাহি_মসজিদ

# মসজিদ

সর্বোচ্চ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মাক্বাম হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক

 সর্বোচ্চ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মাক্বাম হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক



ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “لِــيَـعْـبُـدُوْنِ (লিইয়া’বুদূন) থেকে لِــيُـصَلُّـوْنِ (লিইউছল্লূন) পর্যন্ত ৮টি মাক্বাম মুবারক রয়েছেন। সেগুলো হচ্ছেন-

১. لِــيَــعْـبُـدُوْنِ - (লিইয়া’বুদূন) ইবাদতের মাক্বাম। তারপর

২. لِــيُـحْسِنُــوْنِ - (লিইউহ্সিনূন) ইহ্সানের মাক্বাম। তারপর

৩. لِــيَــقْـرَبُــوْنِ - (লিইয়াক্ব্রবূন) কুরবতের মাক্বাম। তারপর

৪. لِــيَــعْرِفُــوْنِ - (লিইয়া’রিফূন) মা’রেফতের মাক্বাম। তারপর

৫. لِــيُـحِـبُّــوْنِ - (লিইউহিব্বূন) মুহব্বতের মাক্বাম। তারপর

৬. لِــيَشْرَحُـوْنِ - (লিইয়াশ্রহূন) শরহে ছুদূরের মাক্বাম। তারপর

৭. لِــيَــفْرَحُـوْنِ - (লিইয়াফ্রহূন) ফালইয়াফরহূ শরীফ উনার মাক্বাম। তারপর

৮. لِــيُـصَلُّـوْنِ - (লিইউছল্লূন) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

ইবাদত বন্দেগী করতে করতে ইহ্সানের দরজায় পৌঁছবে, ইহ্সানের দরজা থেকে কুরবত হাছিল করবে, কুরবতের থেকে মা’রেফাত হাছিল করবে, মা’রেফাত থেকে মুহব্বত হাছিল করবে, মুহব্বত থেকে তার শরহে ছুদূর হবে, শরহে ছুদূরের কারণে সে খুশি প্রকাশ করবে এবং তখনই তার পক্ষে لِــيُـصَلُّـوْنِ (লিইউছল্লূন) এর মাক্বাম অর্জন করা সম্ভব হবে।”  (আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ শরীফ ১/২৫৫)

পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই এই ৮টি মাক্বাম মুবারক প্রকাশ করেন। ইতিপূর্বে কেউ এই ৮টি মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে জানতো না’; হাছিল করার তো প্রশ্নই উঠে না। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ মাক্বাম হচ্ছেন সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম, যা সর্বশেষ মাক্বাম মুবারক।”

পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানের সুন্দর শরীয়ত সম্মত নাম রাখা

পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানের সুন্দর শরীয়ত সম্মত নাম রাখা

খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র খিলাফতকালে এক পিতা আসলেন। এসে একটা মামলা দায়ের করলেন। মামলা হলো- পিতা বললো যে, “হে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে, মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে সন্তানদেরকে আদেশ দিয়েছেন পিতার হক্ব আদায় করার জন্য। কিন্তু আমার সন্তান আমার কোন হক্ব আদায় করেনা। কাজেই আমি তার বিরুদ্ধে আপনার কাছে মামলা দায়ের করলাম। আপনি দয়া করে এটার ব্যবস্থা করে দিন।”
পিতা মামলা দায়ের করা মাত্রই খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সে সন্তানকে ডেকে পাঠালেন। যখন সন্তানকে ডেকে পাঠানো হলো, সন্তান হাযির হলো। হাযির হওয়ার পরে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “হে সন্তান! তুমি তোমার পিতার হক্ব আদায় করনা কেন যথাযথভাবে? মহান আল্লাহ্ পাক তিনি যে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন, মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন সে অনুযায়ী তুমি কেন হক্ব আদায় করনা?” সন্তান বললো, “হে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আমার কিছু কথা আছে। অবশ্যই আমার অপরাধ হলে আমি শাস্তি গ্রহণ করবো, কোন অসুবিধা নেই। তবে আমারও কিছু কথা আছে।” খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “কি কথা তোমার রয়েছে, বল!” তখন সে সন্তান বললো, “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! প্রথম আমার জানার বিষয় হচ্ছে, সন্তানের প্রতি পিতার কি হক্ব রয়েছে? সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার কি হক্ব রয়েছে?” যখন এই প্রশ্ন করা হলো, তখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলে দিয়েছেন যে, সন্তানের কতটুকু হক্ব। পিতার প্রতি সন্তানের তিনটা হক্ব রয়েছে।
এক নাম্বার হচ্ছে, যে কোন পুরুষ, সে এমন মেয়ে বিয়ে করবেন, যে মেয়েটা হচ্ছে পরহেযগার, দ্বীনদার, আল্লাহ্ওয়ালী।
দুই নাম্বার হচ্ছে, সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করবে তখন সে পিতা সন্তানের একটা শরীয়তসম্মত সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখবেন।
তৃতীয় নাম্বার হচ্ছে, সন্তান যখন বড় হবে তখন তাকে দ্বীনি ইল্ম তা’লীম দিবেন। এই তিনটা সন্তানের প্রাপ্য হক্ব পিতার কাছে।”
যখন এটা বলা হলো, তখন সে সন্তান বললো যে, “আপনি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করুন, উনি আমার হক্ব আদায় করেছেন অথবা করেননি।” যখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম সে পিতাকে ডেকে আনলেন যে, “তুমি তোমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছ, এখন তোমার ছেলে তোমার বিরুদ্ধে বলেছে, তুমি তোমার সন্তানের হক্ব আদায় করেছ কিনা?” পিতা চুপ করে রইলো। তখন সন্তান বললো যে, “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম, মূলতঃ আমার পিতা আমার একটা হক্বও আদায় করেননি।
এক নাম্বার হচ্ছে, যিনি আমার মাতা উনি কৃতদাসী। শরীয়তের সাথে উনার কোন সম্পর্ক নেই। ইল্ম-কালাম, আমল-আখলাক বলতে উনার কিছুই নেই।
দুই নাম্বার হচ্ছে, আমার এমন নাম রাখা হয়েছে যা মানুষ শুনলে হাসে।” “নাম কি রাখা হয়েছে?” “নাম রাখা হয়েছে ‘জুল।” ‘জুল’ অর্থ হচ্ছে, ‘গোবরের পোকা।’
তিন নাম্বার হচ্ছে, আমাকে দ্বীনি ইল্ম বলতে কিছুই শিক্ষা দেয়া হয়নি। আমি শরীয়ত সম্পর্কে কিছুই জানিনা। যার জন্য আমার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই পিতা-মাতার হক্ব আদায় করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়না ইত্যাদি। এলোমেলো অনেক কাজই আমার দ্বারা হয়ে থাকে যেহেতু আমার সে বিষয়ে কিছুই জানা নেই। পিতাকে বলা হয়েছিল, আমাকে দ্বীনি ইল্ম দেয়ার জন্য কিন্তু পিতা সে ব্যবস্থা করেননি, যার জন্য আমার পক্ষে হক্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি।” যখন এ কথা বলা হলো, তখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মামলা খারিজ করে দিলেন। তিনি বললেন “এই মামলা এখানে চলবেনা। কারণ তুমি সন্তানের হক্ব আদায় করনি অতএব সন্তানও তোমার হক্ব আদায় করবেনা।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পবিত্র নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সবাইকে পিতা-মাতা এবং সন্তানের হক্ব আদায় করার তাওফিক দান করুন

#পিতা_মাতা
#পিতা_মাতার_প্রতি_সন্তানের _কর্তব্য
#পিতা_মাতার_দায়িত্ব
#সন্তানের_সুন্দর _শরীয়ত_সম্মত_নাম