>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১

আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।

 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,খত্বামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবানে ইরশাদ মুবারক করেন-
" যারা আমার পবিত্র বংশধর সম্মানিত আওলাদ ও মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে  মাল দিয়ে , সম্পদ দিয়ে 
খিদমত  মুবারকের আঞ্জাম দিবে তাদেরকে আমি  কিয়ামতের দিন তথা দায়িমীভাবে সবসময় শাফায়াত করব ।" সুবহানাল্লাহ্।


এ প্র্রসঙ্গে “আনোয়ারুল আরেফীন” নামক কিতাবে বর্ণিত আছে -
হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বড় একজন বুযূর্গ ব্যক্তি আল্লাহওয়ালা ছিলেন। উনার অনেক মুরিদ-মুতাকিদ ছিলেন। তিনি উনার হায়াতে ৫০ বার পবিত্র হজ্জ সম্পাদান করেছেন। উনার  ৫১তম বছর তিনি উনার সাথীদের নিয়ে হজ্জের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার উনার পে যাত্রা শুরু করলেন।তিনি বলেন যখন আমরা কূফা নামক স্থানে পৌছালাম। তখন প্রত্যেকেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ক্রয় করার জন্য বাজারে গেলাম। হঠাৎ বাজারের পাশে একটি জঙ্গল আমার দৃষ্টিগোচরে আসলো। সেখানে মৃত একটি খচ্চর বা গাধা পড়ে আছে।আর জীর্ণ-শীর্ণ কাপড় পরিহিতা এক মহিলা (যাকে দেখে মনে হলো অত্যন্ত শরীফ) তিনি উনার  চাকু মুবারক দিয়ে খচ্চর বা গাধার গোশত কেটে কেটে উনার থলি মুবারকে রাখছেন।

তখন আমার সন্দেহ হলো যে, মহিলাটি মৃত জন্তুর গোশত নিয়ে বাজারে বিক্রি করে কিনা? তা দেখার জন্য আমি অতি সংগোপনে উনার পিছে পিছে যেতে লাগলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর মহিলাটি একটি বাড়ীর দরজার করা নাড়ল, তখন জীর্ণ-শীর্ণ কাপড় পরিহিতা চারটি মেয়ে দরজা খুলে দিল। উনাদেরকে দেখেও মনে হলো উনারা অত্যন্ত শরীফ বংশের লোক। মহিলাটি ঘরে প্রবেশ করে ক্রন্দনরত অবস্থায় উনাদেরকে বললেন, এ গোশতগুলো পাক কর এবং মহান আল্লাহ্ পাক উনার শুকরিয়া আদায় কর।

আমি এ হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখে অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে সেই মহিলাকে ডাক দিয়ে বললাম, “হে মহান আল্লাহর বান্দীরা! আপনাদের এ হারাম গোশত খাওয়ার পিছনে কি কারণ রয়েছে? আপনারা কি মজুসী? আমার জানা মতে মজুসীদের মধ্যে একদল আছে যারা মৃত গাধার গোশত খাওয়া জায়েয মনে করে।” এর জবাবে মহিলাটি পর্দার আড়াল থেকে বললেন, “হে অপরিচিত ব্যক্তি! আপনার হয়তো জানা নেই, আমরা হলাম নবুওওয়াতী খান্দানের লোক অর্থাৎ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আমাদেরকে যিনি রক্ষাণাবেক্ষণ করতেন এই মেয়েদের পিতা, তিনি গত তিন বৎসর পূর্বে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। পরিত্যক্ত সম্পদ যা ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। আমাদের জানা আছে যে, মৃত জন্তুর গোশত খাওয়া জায়েয নেই। কিন্তু আমরা আজ তিন দিন যাবত না খেয়ে রয়েছি, এখন আমাদের জন্যে মৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া মুবাহ্।”

হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, “আমি সম্মানিতা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম   উনার এই হৃদয় বিদারক ঘটনা শুনে অনেকক্ষণ কাঁদলাম। অতঃপর বললাম, আপনারা এ সমস্ত খাদ্য দয়া করে খাবেন না। আমি খাদ্যের ব্যবস্থা করছি- বলে বাজারে গিয়ে উনাদের জন্য কাপড়-চোপড় এবং খাবার কিনে নিয়ে আসলাম। আর ছয়শত দিরহাম উনাদেরকে হাদিয়া স্বরূপ দিলাম। যদিও এর কারণে আমার হজ্বে যাওয়ার টাকা-পয়সা শেষ হয়ে গেল।

এগুলো পেয়ে উনারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন।

মহিলাটি দোয়া করলেন, “আয় আল্লাহ্ পাক, হজ্জের উনার আগের এবং পরের সমস্ত গুণাহ্ মাফ করুন এবং উনাকে জান্নাত নছীব করুন।”

বড় মেয়েটি দোয়া করলেন, “আয় আল্লাহ্ পাক! উনার গুণাহমাফ করে দ্বিগুণ ছওয়াব দান করুন।”

দ্বিতীয় মেয়েটি দোয়া করলেন, “আয় আল্লাহ্ পাক! তিনি যা দান করেছেন, তার চেয়ে বেশী দান করুন উনাকে।”

তৃতীয় মেয়েটি দোয়া করলেন, “আয় আল্লাহ্ পাক! উনাকে আমাদের নানা রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একত্রিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।”

এবং সবশেষে ছোট মেয়েটি বললেন, “আয় আল্লাহ্ পাক! তিনি আমাদের প্রতি যে ইহসান করেছেন, উনাকে অচিরেই উত্তম জাযা দান করুন।”

অতঃপর আমি কুফাতে এসে দেখলাম হাজীদের কাফেলা হজ্জের উদ্দেশ্যে চলে গিয়েছে। তখন আমি সেখানেই রয়ে গেলাম। যথাসময়ে হাজীদের প্রত্যাবর্তনের সময় হয়ে আসল। তাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে দোয়া নেয়ার জন্য আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম।

হাজীদের কাফেলা পর্যায়ক্রমে আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমি উনাদেরকে মুবারকবাদ দিচ্ছিলাম। আর উনারা প্রত্যেকেই আমাকে দেখে অবাক হয়ে বলছিলেন, আপনি কিভাবে আমাদের পূর্বেই চলে আসলেন? আমরা আপনাকে তো আরাফাতের ময়দানে, মুযদালিফায়, মিনাতে, মদীনা শরীফে, হজ্জের প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখেছি। এমনকি একজন হাজী বললেন, “আপনি রওজা শরীফ যিয়ারত করার পর বাবে জিব্রাঈল থেকে বের হওয়ার সময় হাজীদের ভীড়ের কারণে আমার কাছে আমানত স্বরূপ এ থলেটি রেখেছিলেন। এখন আপনার থলেটি আপনি গ্রহণ করুন।” উক্ত হাজী ছাহেব এমনভাবে বললেন যে, থলেটি আমাকে গ্রহণ করতেই হলো। কিন্তু ইতোপূর্বে এ থলেটি আর কখনো দেখিনি।

অতঃপর আমি বাড়ীতে এসে ঘটনাগুলো ফিকির করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্নে রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দীদার মুবারক লাভ হল। আমি সালাম দিয়ে উনার হস্ত মুবারক চুম্বন করলাম। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি হেসে বললেন, “হে  রবি বিন সুলাইমান (রহমতুল্লাহি আলাইহি )! তুমি যে হজ্ব করেছ, তা প্রমাণ করার জন্য আমি আর কতজন সাক্ষী পেশ করব?” জবাবে আমি বললাম, “ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দুনিয়ার আর কেউ না জানুক আপনিতো জানেন যে, আমি এ বৎসর হজ্জ করিনি।”

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হ্যাঁ তুমি হজ্জে যাওনি ঠিকই; কিন্তু যখন তুমি আমার সম্মানিতা আওলাদ উনাদের খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিলে, আর উনারা তোমার জন্য দোয়া মুবারক করলেন, তখন আমিও উনাদের সাথে সাথে মহান আল্লাহ্ পাক উনার নিকট দোয়া করলাম, যেন মহান আল্লাহ্ পাক তোমাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করেন। এই দোয়ার কারণে মহান আল্লাহ্ পাক তোমার আকৃতিতে একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করলেন। সেই ফেরেশতা তোমার পক্ষ হয়ে, তোমার আকৃতিতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত প্রতি বছর হজ্জ করবেন, আর তার ছওয়াব তোমার আমলনামায় পৌছতে থাকবে। আর উক্ত থলিতে তোমাকে তোমার ছয়শত (৬০০) রৌপ্যমুদ্রার পরিবর্তে (৬০০) স্বর্ণমুদ্রা দেয়া হয়েছে।”

অতঃপর রাউফুর রহীম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই বাক্যটি উচ্চারণ করলেন যে, “আমাদের সাথে যে ব্যবসা করে, সে লাভবান হয়।”

মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে অন্তরের অন্তঃস্থল হতে হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ মুহব্বত করার তৌফিক দান করুন।

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১

নবী প্রেমের উজ্জ্বল দষ্টান্ত হযরত ওয়ায়েস আল-করনী রহমতুল্লাহি আলাইহি

 হযরত ওয়ায়েস আল-করনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ



ওহুদ যুদ্ধে( জিহাদ) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,খত্বামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁত মুবারক শহিদ হন। আর তৎক্ষণাৎ মহান আল্লাহ পাক খয়রুত  তাবেয়ীন হযরত ওয়ায়েস আল-করনী রহমতুল্লাহি আলাইহি কে  উলহামের মাধ্যমে জানিয়ে দেন। আর তারপর খয়রুত  তাবেয়ীন হযরত উয়ায়েস্ আল-কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি  তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যথা মুুবারক অনুভবের মহব্বতে একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন। অতঃপর তিনি চিন্তা করেন কোন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁত মুবারক শহীদ হয়েছে তা তো তিনি জানেন না। তাহলে যদি অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁত মুবারক হয়? এই ভাবে তিনি এক এক করে সমস্ত দাঁত পাথর দ্বারা ভেঙ্গে ফেলেন।
সুবহানাল্লাহ্।

শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১

উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও জলীলুল ক্বদর নবী - রসূল আলাইহিস সালাম গণের সাথে কথোপকথন

উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও জলীলুল ক্বদর নবী - রসূল আলাইহিস সালাম গণের সাথে কথোপকথন



নূরে মুজাসসাম , সাইয়্যিদুল কাওনাইন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান উনার পবিত্র হেরেম শরীফে থাকাকালীন  উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার জলীলুল ক্বদর আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম গণের সাথে স্বপ্নে কথোপকথের বর্ণনা
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন ," রসূলগণের একজনের উপর জনকে প্রাধান্য দিয়েছি ।" ( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা বাক্বারা শরীফ : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ নাম্বার ২৫৩)
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন ,
" আর মহান আল্লাহ পাক যখন নবীগণের ( আলাইহিমুস সালাম)  কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন যে , আমি কিতাব ও হিকমত যা কিছু আপনাদের দান করেছি। অতপর আপনাদের নিকট কোন রসূল আসেন আপনাদের কিতাবকে সত্য বলে প্রতিপ্রাদন করার জন্য,তখন সেই রসূলের প্রতি ঈমান আনবেন এবং তাঁকে সাহায্য করবেন । মহান আল্লাহ পাক বললেন, আপনারা কি অঙ্গীকার করছেন এবং এই শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহণ করে নিয়েছেন ? তখন তাঁরা বললেন , আমরা অঙ্গীকার করছি । মহান আল্লাহ পাক বললেন, তাহলে এবার স্বাক্ষী থাকুন । আমার আমিও আপনাদের সাথে স্বাক্ষী রইলাম ।"( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা আল ইমরান শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৮১)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াতে কারীমা সম্পর্কে আল্লামা সুবুকী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন , এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফে আখত রসূল বলতে নূরে মুজাসসাম , সাইয়্যিদুল কাওনাইন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে এবং এমন কোন আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম অতিবাহিত হন নাই যাঁর কাছ থেকে উনার সম্পর্কে অঙ্গীকার নেওয়া হয়নি ।
মূলতঃ কোন নবী আলাইহিস সালাম উনারকে নুবুওয়্যাত মুবারক দেয়া হয়নি এবং কোন রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে রিসালাত দেয় হয়নি যতক্ষণ না উনারা ( সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম ) নূরে মুজাসসাম , সাইয়্যিদুল কাওনাইন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ঈমান না এনেছেন অর্থাৎ উনারা ( সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম ) সকলেই নূরে মুজাসসাম , সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ,সাইয়্যিদুল কাওনাইন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা - মর্তবা সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিলেন । তাই  নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বের সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা  নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম কে ধারাবাহিক ভাবে মুবারকময় স্বপ্নে সে সুসংবাদ জ্ঞাপন করেছেন ।
এখন আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান ( আলাইহাস সালাম ) উনার পবিত্র জবান মুবারকে আখেরী নবী ও রসূল  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন বার্তা সম্পর্কে অন্যান্য হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম গণের ভবিষ্যদ্বানী মুবারক
 উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম বলেন ,যখন আমি আমার প্রাণ প্রিয় সন্তান হযরত মুহম্মদ  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করলাম। ধারণ করার প্রথম মাস হলো রজবুল আসাম । সে  মাসে একসময় আমি একরাত্রে স্বপ্নের আবেশে ছিলাম । তখন আমার কক্ষে প্রবেশ করলেন এক ব্যক্তি যিনি ছিলেন লাবণ্যময় চেহারা বিশিষ্ট সুঘ্রাণে ভরপুর এবং আলোকোজ্জ্বল । ইয়া মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনাকে স্বাগতম । আমি ( হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম )উনাকে প্রশ্ন করলাম: আপনি কে?তিনি বললেন , আমি মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম । আমি বললাম আপনার অভিপ্রায় কি?তিনি বললেন, হে  হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন। আপনি মূলতঃ পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন যিনি রবিয়া ও মুদার গোত্রের ফখর (  গৌরবের কারণ ) যিনি সাইয়্যিদুল বাশার । সুবহানাল্লাহ্ ।
যখন দ্বিতীয় মাস( শাবান শরীফ)  হল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমণ করলেন । তিনি বললেন , আসসালামু আলাইকা ইয়া রসূলাল্লাহ  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন, আমি হযরত শীশ আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন । নিশ্চয়ই আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন যিনি রহস্যের উন্মোচক এবং ( জাওয়ামিউল কালাম) সহেবে হাদীস । সুবহান্নাল্লাহ্ ।
তৃতীয় মাস ( পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ) যখন আগমণ করল তখন আমার নিকট এলেন ( স্বপ্নে) এক ব্যক্তি । তিনি বললেন , আসসালামু আলাইকা ইয়া নাবীআল্লাহ  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন, আমি হযরত ইদ্রীস আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি?  তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন । নিশ্চয়ই আপনি হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম গণের সর্দারকে পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন । সুবহান্নাল্লাহ্ ।
চতুর্থ মাস ( শাওয়াল শরীফ )যখন আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমণ করলেন । তিনি বললেন , আসসালামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ   ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন, আমি হযরত নূহ আলাইহিস সালাম ।আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি?তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন । নিশ্চয়ই আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন যিনি  সাহায্য ও বিজয়ের সাহিব বা অধিকারী ।
পঞ্চম মাস ( জিলক্বদ শরীফ)যখন আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করলেন । তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকুম ইয়া সাফওয়াতাল্লাহি! হে মহান আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন ! আপনার প্রতি পবিত্র সালাম মুবারক । আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন, আমি হযরত হুদ  আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি?তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন ।কেননা আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন প্রতিশ্রুতি দিবসের( হাশরের দিনের) শাফায়াতে উজমার যিনি অধিকারী বা মালিক হবেন উনাকে।
ষষ্ঠ মাস (  পবিত্র জিলহজ্জ্ব মাস ) যখন আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করলেন । তিনি বললেন , আসসালামু আলাইকা ইয়া রহমাতাল্লাহ্ !হে মহান আল্লাহ পাক উনার  রহমত! আপনার প্রতি পবিত্র সালাম মুবারক । আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন, আমি হযরত ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ  আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি?তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন । কেননা আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন মহাসম্মানিত নবীকে (ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম )।
সপ্তম মাস ( পবিত্র মহররম শরীফ) যখন আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করলেন । তিনি বললেন ,হে আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি !আপনার প্রতি পবিত্র সালাম মুবারক । আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন,আমি হযরত ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ  আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন ।  কেননা আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন সবিশেষ লাবণ্যময়  নবীকে (ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম )।
আষ্টম মাস ( পবিত্র সফর শরীফ) যখন আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করলেন । তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকুম ইয়া খাইরাতাল্লাহ্! হে মহান আল্লাহ পাক উনার  সমূহ কল্যাণ ! আপনার উপর মুবারক  শান্তি বর্ষিত হোক । আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন,আমি হযরত মুসা ইবনে ইমরান আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন ।কেননা আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন যার উপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফ নাযিল হবে উনাকে ।
যখন নবম মাস ( মহাসম্মানিত রবিউল আউওয়াল শরীফ ) আগমন করল তখন এক ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করলেন । তিনি বললেন,ইয়া খাতামা রসূলিল্লাহ! হে  মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল গনের ( আলাইহিমুস সালম) সর্বশেষ ! আপনার আগমন নিকটবর্তী ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !আমি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে বললাম, আপনি কে?তিনি বললেন,আমি হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আলাইহিস সালাম । আমি বললাম , আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন , হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালম !!আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন । কেননা আপনি পবিত্র হেরেম শরীফে ধারণ করেছেন মহাসম্মানিত নবী-মহামান্বিত রসূলকে (ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম )।আপনার থেকে দূর হয়ে গেল দূঃখ কষ্ট-রোগ-যন্ত্রণা।
( আল নি'য়ামাতুল কুবরা  আলাল আলাম  ইবনে হাজার হায়সামি ও মাসিক আল বায়্যিনাত শরীফ ৬৪,৬৫ ও ৬৬ পৃষ্ঠা)
অতএব, উপরোক্ত আলোচনা দ্বাা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা ও বুযুর্গীর সাথে সাথে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনারও মর্যাদা ও বুযুর্গী ফুটে উঠেছে ।

দরুদ শরীফ পাঠ না করার অপকারীতা

দরুদ শরীফ পাঠ না করার অপকারীতা


খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন:-
"তোমরা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহবানকে এমন মনে করো না । যেমন তোমাদের মাঝে একে অপরকে আহবান করে থাকে ।"(  মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা নূর শরীফ :মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে ব্যক্তি আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) উপর পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করতে ভুলে যায় স্মরণ রেখ সে ব্যক্তি বেহেশতের পথ ভুলে যাবে ।"
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে ,সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে ব্যক্তি আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) পবিত্র নাম মুবারক উনার শ্রবণ করে পবিত্র দরুদ শরীফ পড়ে না তার ধবংস অনিবার্য ।"
সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে আরো ইরশাদ মুবারক করেন,"অত্যন্ত জঘণ্য বখিল সেই ব্যক্তি সেই যার সামনে আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারিত হয় অথচ সে পবিত্র দরুদ শরীফে কার্পন্য করে বা পড়ে না ।"
আমীরুল মু'মিনীন ,খলীফাতুল মুসলিম সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ'যম আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন,মুমিনের দোয়া, মুনাজাত ইত্যাদি আসমান-জমিনের মধ্যস্থলে ঝুলে থাকে, যদি তাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ না করে । অর্থাৎ পবিত্র দরুদ শরীফ ব্যতীত ঐ দোয়া কালাম মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হয়না ।"
অন্য হাদীছ শরীফে আছে ,সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে মজলিশে আমার( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )  প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা হয়না ,সে মুজলিশে যোগদানকারীদের জন্য তা বেহেশতের উছিলা হলেও তাদের জন্য বরই অনুতাপের কারণ হবে ।"
এর তাৎপর্য হলো যে, দ্বীনি ওয়াজ-নছীয়ত ও মাসয়ালা-মাসায়েল আলোচনার কারণে ঐ মজলিশে যোগদানকারীগণ বেহেশত লাভ করবে বটে তবে যেহেতু ঐ মজলিশে পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ হয়নি তাই তারা পূর্ণ মর্যাদার অধিকারী হতে পারবেনা ।
উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা  আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদিন আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উজ্জ্বল চেহারা মুবারকে বিশেষ এক নুরানী আভা অবলোকন করে বললাম , ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!  ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !আপনার চেহারা মুবারক কতই না জ্যোতির্ময় । তখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম !রোজ হাশরে যে ব্যক্তি আমার পবিত্র নূরানী চেহারা মুবারক দর্শনে মাহরুম থাকবে তার জন্য বড়ই অমঙ্গল? তখন উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস বললেন, আমি আরজ করলাম কোন হতভাগা আপনার পবিত্র নূরাণী চেহারা মুবারক দর্শনে মাহরুম থাকবে?  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি ক্পণ। উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস বললেন,ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!  ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !কৃপণ কোন ব্যক্তি?  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,যে ব্যক্তি আমার পবিত্র নাম মুবারক শুনে পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করে না ।"
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে , হযরত কা'ব ইবনে উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু  উনার হতে বর্ণিত । তিনি বর্ণনা করেন যে , একদিন খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল , সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন , হে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম! আপনারা প্রত্যেকেই মিম্বরের কাছে আসুন । মিম্বরের কাছে হাজির হও । আমরা সকলেই মিম্বরের কাছে হাজির হলাম । খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ,নূরে মুজাসসাম , হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হয়ে একসিঁড়ি  দুই সিঁড়ি , তিন সিঁড়ি করে তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়ালেন । প্রত্যেক সিঁড়িতে উঠার সময় আমীন, আমীন , আমীন বললেন। তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কিছু নছীহত মুবারক করলেন । নছীহত মুবারক শেষ করে আবার নেমে আসলেন । যখন নেমে আমাদের কাছে এসে বসলেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আজকে আমরা এমন কিছু কথা মুবারক আমরা শুনলাম ,যেটা পূর্বে আর কখনও শুনিনি  আপনার পবিত্র জবান মুবারক থেকে । যে, কি শুনেছ? যে,আপনি প্রত্যেক সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় প্রত্যেক সিঁড়িতে আমীন, আমীন, আমীন বলেছেন , এর কি কারণ রয়েছে ? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে দেখ, আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন ঐ ব্যক্তি ধ্বংস (হালাক) যে পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ পেল , কিন্ত নিজের গুনাহখাতা সে ক্ষমা করাতে পারলোনা সে হালাক,সে ধ্বংস। " খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি তখন বললাম, "আমীন।" হ্যাঁ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস , যে পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ পেল অথচ তার গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পারলোনা, সে ধ্বংস ,সে হালাক। এরপর যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন আমি আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস ( হালাক),যে ব্যক্তির সামনে আপনার পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো কিন্তু সে আপনার প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করলোনা , সে ব্যক্তি ধ্বংস,সে হালাক।" আপনি বলুন,"আমীন।" নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন," আমীন।" হ্যাঁ সে ব্যক্তি ধ্বংস ,সে ব্যক্তি হালাক , যে আমার পবিত্র নাম মুবারক শুনলো অথচ আমার প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করলোনা । তৃতীয় যখন আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন ঐ ব্যক্তি ধ্বংস (হালাক) যে জীবিত অবস্থায় তার পিতা-মাতাকে পেল অথচ নিজের গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পারলোনা । " খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,আমি তখন বললাম, "আমীন।" হ্যাঁ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস , যে নিজের পিতা-মাতা জীবিত অবস্থায় পেল কিন্তু নিজের গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পেল না সে ধ্বংস,সে হালাক।
এইজন্য ফতওয়া দেয়া হয়েছে-সারা জীবনে একবার পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা ফরজ। আর প্রত্যেক মজলিশের মধ্যে একবার পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। আর প্রত্যেকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে বেশী বেশী পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করার তাওফিক দান করুন ।
আমীন।

বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির দুইশত বছরের গুনাহ্খাতা মাফের কারণ

বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির দুইশত বছরের গুনাহ্খাতা মাফের কারণ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে,বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির দুইশত বছর হায়াত পেয়েছিল ।তার অনেক গুনাহ্খাতা ছিল । যখন সে ব্যক্তি ইন্তিকাল করলো তখন খালিক.মালিক ,রব মহান আল্লাহ পাক হযরত মূসা কালীমুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম উনাকে নির্দেশ মুবারক দিলেন সেই ব্যক্তির জানাযা,দাফন-কাফনের জন্য। মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম সেখানে উপস্থিত হয়ে জানতে পারলেন যে,সে এলাকার লোকেরা তাকে পছন্দ  করেনা । কারণ সে অনেক গুনাহ্ করেছে । এলাকার লোকেরা বলল ,হে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ! আপনি জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল (আলাইহিস সালাম) হয়ে এ গুনাহ্গার লোকটির জানাযা,দাফন-কাফনের জন্য কেন এসেছেন?
তখন হযরত মূসা কালীমুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আরজ করলেন,আয় খালিক,মালিক,রব মহান আল্লাহ পাক ! এ ব্যক্তিকে এলাকার লোকেরা ভাল বলেনা অথচ আপনি আমাকে নির্দেশ মুবারক করেছেন তার জানাযা,দাফন-কাফনের জন্য, এর কারণ কি? তখন খালিক.মালিক ,রব মহান আল্লাহ পাক বললেন, হে আমার নবী ও রসূল হযরত মূসা আলাইহিস সালাম!আমিও জানি তার কিছু গুনাহ্খাতা রয়েছে । কিন্তু তার এমন একটি খাছ আমল রয়েছে যে আমলের বিনিময়ে আমি তারশত বছরের গুনাহ্খাতা মাফ করে আপনার মত জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল( আলাইহিস সালাম) কে নির্দেশ মুবারক দিয়েছি ,তার জানাযা,দাফন-কাফনের জন্য । হযরত মূসা আলাইহিস সালাম আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! এমন কি আমল রয়েছে যার বিনিময়ে দুইশত বছরের গুনাহ্খাতা মাফ হয়ে যায়? জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল (আলাইহিস সালাম) গোসল,জানাযা,ও দাফন-কাফনের জন্য নির্দেশ প্রাপ্ত হন?
মহান আল্লাহ পাক বলেন, ঐ ব্যক্তি তাওরাত কিতাব পাঠ করত । তাওরাত কিতাবের মধ্যে আমার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন,নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র যিকির বা পবিত্র নাম মুবারক রয়েছে । যখনই আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র যিকির বা পবিত্র নাম মুবারক আসতো তখনই সে অত্যন্ত মুহব্বতের সাথে আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র যিকির বা পবিত্র নাম মুবারক চুম্বন করতো । এ কারণেই আমি(মহান আল্লাহ পাক ) তার দুইশত বছরের গুনাহ্খাতা ক্ষমা করে আপনার মতো জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল (আলাইহিস সালাম) কে নির্দেশ মুবারক দিয়েছি তার গোসল,জানাযা ও দাফন-কাফনের জন্য । সুবহানাল্লাহ্।

মীলাদ শরীফ পাঠের ফদ্বিলত

মীলাদ শরীফ পাঠের ফদ্বিলত


খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন :-
"নিশ্চয়ই খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম গণেরা উনার(  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) উপর পবিত্র ছলাত ও সালাম শরীফ পাঠ করেন । হে ঈমানদারগণ, তোমরাও উনার(  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) প্রতি পবিত্র ছলাত ও সালাম শরীফ পাঠ করার মতো পাঠ কর । "( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা আহযাব শরীফ :মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
বস্তুতঃ বান্দার প্রতি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার  সরাসরি নির্দেশ হচ্ছে -তারাও যেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র  ছলাত ও সালাম শরীফ পাঠ করে ।
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ছানা-সিফত মুবারক করা যেরুপ অশেষ রহমত ও বরকতের কারণ, তদ্রুপ  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক নিয়ে আলোচনা করা ছানা-সিফত মুবারক বর্ণনা করাও অসংখ্য ফযিলতের কারণ ।
বলা হয়ে থাকে, "খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক  রাব্বুল আলামীন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফের প্রত্যেকটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফে  সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন,শাফিউল উমাম,নুরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছানা-সিফত মুবারক বা প্রশংসা মুবারক করেছেন ।"
মূলতঃ মীলাদ শরীফ পাঠই হচ্ছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছানা-সিফত মুবারক ও জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা মুবারক করা ও উনার প্রতি পবিত্র ছলাত ও সালাম পাঠ করা।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে  পবিত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন,শাফিউল উমাম,নুরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে ব্যক্তি আমার (  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) উপর পবিত্র ছলাত পাঠ করবে ,মহান আল্লাহ পাক তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন ,দশটি গুনাহ মাফ করবেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন ।" আরো বলা হয়েছে যে ," ঐ ব্যক্তিই কিয়ামতের দিন আমার(  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ) সবচেয়ে নিকটে থাকবে । যে আমার (  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ) প্রতি অধিকমাত্রায় পবিত্র ছলাত পাঠ করবে ।"( তিরমিযী শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন,শাফিউল উমাম,নুরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-সিফত মুবারকবর্ণনা করতে গিয়ে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন :-
"( হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) আমি আপনার আলোচনা বা প্রশংসা কে সমুন্নত করেছি ।"( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা আলাম নাশরাহ্  শরীফ :মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ০৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে আমার( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) পবিত্র আলোচনা মুবারক করবে তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তার জন্য আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) সুপারিশ ওয়াজিব হবে ।" সুবহানাল্লাহ্ ।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনারাও সকলে একত্রিত হয়ে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা মুবারক তথা পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেছেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-সিফত মুবারক বা প্রশংসা মুবারক বর্ণনা করেছেন ।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয় , হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু হতে বর্ণিত যে ,তিনি একদিন  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আবু আমের আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার ঘরে গেলেন । তিনি সেখানে দেখতে পেলেন যে, হযরত আবু আমের আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার নিজ সন্তানাদি ও আত্নীয়-স্বজনদের একত্রিত করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক উপলক্ষ্যে ( জন্ম বৃত্তান্ত মুবারক) আলোচনা মুবারক করেছেন । এটা দেখে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি হলেন এবং বললেন," হে আমের (রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু ) ! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার ( মহান আল্লাহ পাক) রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। সকল ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম গণেরা আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ।এবং আপনার ন্যায় এরুপ আমল যারা করবে উনারাও আপনার ন্যায় নাজাত পাবে ।" সুবহানাল্লাহ্ ।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে যে," একদিন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু সেখানকার সকল লোকদের কে উনার নিজ ঘরে একত্রিত করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সম্পর্কে আলোচনা মুবারক করেন। যা শুনে উপস্থিত সকলেই আনন্দে চিত্তে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছলাত ও সালাম শরীফ পাঠ করলেন । এমন সময় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হলেন এবং উনাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আনাদের জন্য আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল ।" ( সুবুলুল হুদা ফী মাওলুদি মুস্তফা ) ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।
উপরোক্ত আলোচনা প্রেক্ষিতে বুঝা যাচ্ছে যে , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্ম বৃত্তান্ত মুবারক নিয়ে আলোচনা মুবারক করা , উনার ছানা-সিফত মুবারক  বা প্রশংসা মুবারক তথা পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাযাত ও শাফায়েত এবং চির সন্তুষ্টি লাভেরও অন্যতম  কারণ ।
তাই হুজুর  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জনৈক বুযর্গ কবি কতই সুন্দরই না বলেছেন ," ইয়া রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমরা  আপনার প্রশংসা মুবারক কি করবো? আপনি তো ঔরুপ যেরুপ আপনর প্রশংসা মুবারক স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক করেছন ।"
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক  আমাদের সকলকে হুজুর  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে চিনে উনার হাক্বীক্বী প্রশংসা করার তৌফিক এনায়ে ত করূন। আমীন।

সুন্নতের আমল ব্যতীত আল্লাহ পাকের ওলী হওয়া সম্ভব নয়

সুন্নতের আমল ব্যতীত আল্লাহ পাকের ওলী হওয়া সম্ভব নয় ।



যদি কেউ হক্কানী ওলী হতে চায় , তবে তাকে অবশ্যই সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণও অনুকরণ করতে হবে । সুন্নতের খেলাফ কাজ করে কেউ হক্কানী ওলী হওয়া সম্ভব নয় । তাই দেখা যায় ওলী আল্লাহ্গণ ভুলবশতঃ বা অনিচ্ছাকৃতভাবেও কোন পবিত্র সুন্নত মুবারক তরক করেছেন ,মহান আল্লাহ পাক সাথে সাথেই উনাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
যেমন এ প্রসঙ্গে কুতুবুল আকতাব হযরত কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব " দলীলুল আরেফীন" এর মধ্যে উল্লেখ করেন,সুলত্বানুল হিন্দ  গরীবে নেওয়াজ,হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত  খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমেরী সাঞ্জারী  রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, বিখ্যাত বুযুর্গ সাইয়্যিদুত্ ত্বয়্যিফা হযরত ফুযায়েল বিন আয়াজ  রহমতুল্লাহি আলাইহি একবার ওযু করার সময় হাত ধৌত করতে গিয়ে তিনবারের স্থলে দু'বার ধুয়েছিলেন। রাতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  স্বপ্নে উনাকে বললেন," হে ফুযায়েল বিন আয়াজ ( রহমতুল্লাহি আলাইহি ) ! নিশ্চয়ই আপনি জানেন আমার(হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অবহেলার অর্থ কি?" সাইয়্যিদুত্ ত্বয়্যিফা হযরত ফুযায়েল বিন আয়াজ  রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন ,স্বপ্নে দেখার পর আতঙ্কে উঠে দাঁড়ালাম এবং নতুন করে ওযু করলাম ও পবিত্র সুন্নত মুবারক তরকের প্রায়শ্চিত স্বরুপ এক বছর পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচশত রাকায়াত করে নামাজ পড়া অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে রেখেছিলাম। অন্যত্র বর্ণিত আছে , এক বছর নফল রোজা আদায় করেছেন । সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তিনি উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ করেন যে , আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত  হযরত ইমাম ছুফিওয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি একবার মসজিদে প্রবেশ করার সময় ডান পায়ের স্থলে বাম পা প্রথমে প্রবেশ করালেন , আর সঙ্গে সঙ্গে গায়বী নেদা বা আওয়াজ হলো-" হে ছাওর ( ষাড়) । অর্থাৎ খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিলেন যে ,আমার( মহান আল্লাহ পাক ) রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নতের খেলাফ আমল করে আমার( মহান আল্লাহ পাক ) ওলী হওয়া সম্ভব নয় ।"
কিতাবে আরো উল্লেখ আছে যে,বিখ্যাত বুযুর্গ হযরত আজল সিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি একদিন ওযু করছিলেন , ওযুর মধ্যে হাত ধৌত করার সময় হাতের আঙ্গুল খিলাল করেননি । সাথে সাথে গায়বী আওয়াজ হলো -  হে আজল সিরাজী (  রহমতুল্লাহি আলাইহি ) আপনি আমার ( মহান আল্লাহ পাক) মহব্বতের দাবীদার হয়ে কেন আমার( মহান আল্লাহ পাক) হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক তরক করলে? এতে হযরত আজল সিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি এত ভীত হলেন যে, পরবর্তীতে কখনো আকাশে তাকাননি। এর কারণ জিঙ্গাসা করা হলে তিনি(  হযরত আজল সিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি  ) বলেন , ওযুর সময় পবিত্র সুন্নত মুবারক তরক করায় আমার (  হযরত আজল সিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি ) প্রতি নেদা করা হয়েছে । তাই আমি (  হযরত আজল সিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি ) লজ্জায় আকাশের দিকে তাকাই না।
কাজেই বলার আর আপেক্ষা রাখে না যে, যারা প্রতি ক্ষেত্রে প্বিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ- অনকরণ করেনা বরং অনেক ক্ষেত্রেই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় দায়েমীভাবে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার খেলাফ আমল করে। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়না । তারা নিশ্চিতরূপে হক্কানী ওলী নয় ।
মূল কথা হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার মহব্বত ও খাছ রেযামন্দী হাছিল করতে হলে পবি্ত্র সুন্নত মুবারক উনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম,পুক্ষ্মানূপুক্ষ্মও পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে ।( মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ৮৫তম সংখ্যা ২৫ পৃষ্ঠা)

হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও মালাউন ইবলিশের মধ্যে কথোপকথন

হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও মালাউন ইবলিশের মধ্যে কথোপকথন

তুর পর্বত

একবার জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাক্ষাত হয় মালাউন ইবলীসের । মালাউন ইবলীস বললো, হে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম!আপনি আপনার রবের  ( মহান আল্লাহ পাকের ) সাথে কথা বলেন,আপনি আপনার রব( মহান আল্লাহ পাক ) কে জিজ্ঞাসা করে দেখুন তো , মহান আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করবেন কিনা ? আমি তওবা করতে চাই।
 হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম মনে করলেন ভাল সুযোগ পাওয়া গেছে , কারণ মালাউন ইবলীস যদি হিদায়েত হয়ে যায় তবে সমস্ত উম্মতই হিদায়েত  হয়ে যাবে। তাই হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম মালাউন ইবলীস কে বললেন,তুমি একটু অপেক্ষা কর , আমি এখনই মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলে আসছি।
 হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার মুবারকে আরজু মুবারক করলেন - আয় বারে ইলাহী খালিক, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক !ইবলীস তার ভুল বুঝতে পেরেছে , সে তওবা করতে চায়, আপনি তার তওবা কবুল করে তাকে মাফ বা ক্ষমা করে দিন ।
খালিক , মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন , হে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম ! আমি  অবশ্যই তাকে মাফ কে দিব , তবে তাকে একটি কাজ করতে হবে , আর তা হলো - সে( মালাউন ইবলীস)  যেন আমার ( মহান আল্লাহ পাক) নবী ও রসূল হযরত আদম সফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কবর শরীফকে সিজদা করে । তবেই আমি( মহান আল্লাহ পাক)  তাকে ক্ষমা করব ।
 হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম এই কথা শুনে খুব খুশি হয়ে গেলেন,এটা তো সহজ কাজ এবার ইবলীস হিদায়েত হয়ে যাবে । এই ভেবে  হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম ইবলীসের নিকট আসলেন এবং বললেন , হে মালাউন ইবলীস !তোমার জন্য সুসংবাদ রয়েছে,তোমাকে মহান আল্লাহ পাক ক্ষমা করে দিবেন , তবে তোমাকে সহজ একটি কাজ করতে হবে । আর তাহলো - তুমি গিয়ে  হযরত আদম সফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কবর শরীফকে একটি সিজদা দিবে, তবে মহান আল্লাহ পাক তোমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
একথা শুনে অহংকারী ও মালাউন ইবলীস বলে উঠলো , হে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম , আপনি বলেন কি? যাকে আমি জীবিত অবস্থায় সিজদাহ করিনি তাকে মৃত অবস্থায় কবরের উপর সিজদাহ করবো? এটা আমার পক্ষে কস্মিনকালেও সম্ভব নয় । নাউজুবিল্লাহ্ । এত সহজ ও সুন্দর সুযোগ দেয়ার পরও ইবলীসের হিদায়েত নছীব হলোনা। কারণ সে অহংকারী ও গোমরাহীর মধ্যে দৃঢ়  ।
যে ব্যক্তি ইবলীসের ন্যায় কিবর বা অহংকারের সমুদ্রের হাবুডুবু খায় এবং ইবলীসের ন্যায় গোমরাহীতে দৃঢ় তাদের হিদায়েত নছীব না হওয়াটাই স্বাভাবিক । তাদেরকে হিদায়েতের পথে আসার জন্য যতই সুযোগ সুবিধা , দলীল-আদিল্লাহ বা যুক্তি প্রদান করা হোক না কেন, তারা কখনোই হিদায়েত গ্রহণ করবেনা।( মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ৮৫তম সংখ্যা ৪৬ ও ৪৭ পৃষ্ঠা)

রহমতে আলম,আফজালুল কায়েনাত,সাইয়্যিদুল বাশার ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ই হলেন সৃষ্টির সর্বশেষ্ঠ ও সর্বশেষ রসূল

রহমতে আলম,আফজালুল কায়েনাত,সাইয়্যিদুল বাশার ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ই হলেন সৃষ্টির সর্বশেষ্ঠ ও সর্বশেষ  রসূল


"হযরত সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত রসূল ও সর্বশেষ নবী ।"( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা আহযাব শরীফ:মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
আর এ প্রসঙ্গে আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখেরীন , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন," আমার দ্বারাই নুবুওওয়াত ও রিসালাতের সিলসিলা খতম বা শেষ করে দেয়া হয়েছে। কাজেই আমার পর আর কোন নবী বা রসূল পৃথীবি আগমণ করবে না। "
ছাহিবে আছালিবে ত্বাহেরীনা ওয়া আরহামী ত্বাহেরা ,নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ ,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে স্বয়ং খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন," আমি (মহান আল্লাহ পাক ) সর্বপ্রথম আপনার(হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূর মুবারক সৃষ্টি করেছি।"
এ প্রসঙ্গে হাদীছে কুদসীতে মহান আল্লাহ পাক বলেন, "আমি (মহান আল্লাহ পাক) যদি আপনাকে(হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টি না করতাম তাহলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না । শুধু আপনাকে(হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টি করার কারণে আমি সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করেছি।" (সুবহানাল্লাহ্)
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,এক ব্যক্তি মাআ'জামা শানুহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দরবার শরীফে এসে আরজ করলেন,ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!আপনি কখন থেকে নবী? ছাহিবে আলক্বাব,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,হযরত আদম আলাইহিস সালাম যখন রূহ এবং জিসিম উনার মাঝে ছিলেন.তখন আমি নবী ছিলাম।"
এ প্রসঙ্গে আহলু বাইতী রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জয়নুল আবেদীন আলাইহিস সালাম উনার পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম থেকে এবং তিনি উনার পিতা আমীরুল মু'মিনীন সাইয়্যিদুনা হয়রত আলী আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণনা করেন । ছাহিবে ইক্বরা ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন," হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বেও আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একখানা নূর মুবারক হিসেবে ছিলাম ।"
ছাহিবে ছালাত ও সালাম,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক পূর্ববর্তী সমস্ত আসমানী কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে ।
" মাওয়াহিব" নামক গ্রন্থে লিখিত আছে,ছাহিবে লাওলাক,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন," কিয়ামতের দিন আমি একটা বোরাকে উপবিষ্ট থাকব এবং সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাঈহিমুস সালাম গণের মধ্যে একমাত্র আমিই বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হব ।"
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহূ উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, ছাহিবে বশীর ওয়া নাজীর ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন," মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সমস্ত সৃষ্টির মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলাম আমি (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) । এতে আমার গর্বের কিছুই নেই।"( তিরমিযী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক ছাহিবে শহীদ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেছেন ।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন:-
" হে ঈমানদারগণ! তোমরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওয়াজ অপেক্ষা উচ্চস্বরে কথা বলোনা এবং তোমরা পরস্পর যেরূপ উচ্চস্বরে কথা বলো,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে ঐ ভাবে কথা বলোনা ,তাহলে তোমাদের নেক আমলসমূহ বরবাদ হয়ে যাবে অথচ তোমরা বুঝতে পারবেনা।"( মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা হুজরাত শরীফ:মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ০২)
ফখরে বাহার ওয়া বার সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ইরশাদ মুবারক করেন," আমি (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে শ্রেষ্ঠ,এতে আমার গর্বের কিছুই নেই। আমি (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ রসূল,এতে আমার গর্বের কিছুই নেই। আমি (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সর্বপ্রথম সুপারিশকারী অর্থাৎ আমার  (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুপারিশ সর্বপ্রথম গ্রহণ করা হবে,এতে আমার গর্বের কিছুই নেই।" ( মিশকাত শরীফ)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,সিরাজাম মুনীরা,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ইরশাদ মুবারক করেন," কিয়ামতের দিন আমার  (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার হামদের পতাকা থাকবে, আর এ জন্য আমি  (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গর্ব করি না যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম গণ আমার  (হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পতাকা তলে থাকবে । " ( তিরমযী শরীফ)
এ ধরণের আরো বহু মহাসম্মানিত আয়াত শরীফ ও মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ রয়েছে যা দ্বারা প্রমাণিত হয় দলীলে কা'বায়ে মাকসূদ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন সরবকালের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল ।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের কে ফখরে কায়িনাত,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিশুদ্ধ পোষণ করে সারওয়ারে কায়িনাত নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-সিফত মুবারক বেশী বেশী করার তাওফিক দান করুন । আমীন।
( মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ৮২ তম সংখ্যা ৭৫ পৃষ্ঠা