>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুহব্বত

 সম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুহব্বত





সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে পরাক্রমশালী এক মুসলিম সিপাহসালার আবু নাসির সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি নামেই যিনি সমধিক মশহুর। ক্রুসেডারদের দখলদারিত্ব থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উদ্ধার করে ইতিহাসে তিনি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। উনার সম্পর্কে যত ইতিহাস গ্রন্থ রয়েছে সবখানেই উনার সম্মানিত জিহাদ, সমরকৌশল, দৃঢ়চেতা মনোভাব ইত্যাদি বিষয়গুলোকেই ফুটিয়ে তোলা হয়ে গেছে। কিন্তু এর বাইরে তিনি যে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দ ছিলেন এবং জিন্দেগীর প্রতিটি ক্ষণেই তিনি সম্মানিত শরীয়ত উনার উপর ইস্তেকামত ছিলেন সে বিষয়ে খুব কমই আলোকপাত করা হয়।
সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পরিপূর্ণরূপে সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদার ছিলেন এবং সম্মানিত শাফেঈ মাযহাব উনার অনুসারী ছিলেন। মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক এবং ফরজ-ওয়াজিব-নফল আমলসমূহ পালনের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সচেষ্ট ছিলেন। এমন কিছু সুন্নত মুবারক রয়েছে যা তিনি উনার জিন্দেগীতে কখনই তরক করেননি। একবার তিনি বলেছিলেন, “বছরের পর বছর গুজার হয়ে গেছে। কিন্তু আমার এক ওয়াক্ত সম্মানিত ছলাতও আমি বিনা জামায়াতে আদায় করিনি।” সুবহানাল্লাহ!
সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক সম্বলিত কবিতা অত্যন্ত পছন্দ করতেন। যা উনার জীবনীলেখক কাজী বাহাউদ্দিন শাদ্দাদের লেখনীতে বিশেষভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তিনি বেশিবেশি পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণ করতেন। যখন কোনো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সামনে বলা হতো তখন তিনি দরবারের সবাইকে নীরব থাকার নির্দেশ দিতেন এবং আদব বজায় রাখতেন। যদি তিনি কখনও শুনতেন যে, কোনো এলাকায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ক্ষেত্রে উচ্চ মর্তবার কোনো শায়েখ অবস্থান করছেন; তিনি তৎক্ষনাৎ সেই শায়েখ উনার কাছে চলে যেতেন এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দরসে উপস্থিত হয়ে তা শ্রবণ করতেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মূল বিষয়বস্তু যদি শিক্ষামূলক এবং উপদেশমূলক হতো তাহলে তিনি তৎক্ষনাৎ শিশুর মতো কান্না করতেন। তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণে এতটাই মাতোয়ারা ছিলেন যে, জিহাদ চলাকালে ময়দানেই তিনি যোদ্ধাদের কাছ থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ শ্রবণ করতেন। সুবহানাল্লাহ!
সপ্তাহের অন্যান্য দিন প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকলেও সম্মানিত ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) তিনি প্রশাসনিক সকল কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। এদিন তিনি বেশি পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি গরীব-মিসকিনদের সাহায্য সহযোগীতা করতেন। বেশি বেশি দান-খয়রাত করতেন। মিশরে অবস্থানকালে কিংবা সামরিক ছফরে থাকা অবস্থায় যেখানেই তিনি থাকতেন সপ্তাহে এই দিন মুবারক তিনি বিশেষভাবে অতিবাহিত করতেন। সুবহানাল্লাহ!
বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়, জিন্দেগী মুবারকে খুব কমবারই উনার পবিত্র যাকাত ফরয হয়েছিলো। কারণ কোনো সময়ই তিনি বেশি পরিমাণ সম্পদ জমা করে রাখেননি। সমস্ত সম্পদ তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পথে খরচ করেছেন। সম্মানিত বিছাল শরীফের সময় তিনি মাত্র একটি দীনার ও ৪৭টি দিরহাম রেখে যান। এছাড়া আর কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তিনি রেখে যাননি।
মূলত, সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কামিয়াবীর মূল রহস্যই হচ্ছেন- উনি সবসময় মূলের দিকে ধাবিত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সম্মানিত শরীয়ত সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে উনারা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতেন। ফলে দুনিয়াবী বিষয়গুলো উনাদের জন্য আসান হয়ে যেতো। সুবহানাল্লাহ!
সূত্র: * আন নাওয়াদিরু’স সুলতানিয়া (কিতাব)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন