>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানের সুন্দর শরীয়ত সম্মত নাম রাখা

পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানের সুন্দর শরীয়ত সম্মত নাম রাখা

খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র খিলাফতকালে এক পিতা আসলেন। এসে একটা মামলা দায়ের করলেন। মামলা হলো- পিতা বললো যে, “হে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে, মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে সন্তানদেরকে আদেশ দিয়েছেন পিতার হক্ব আদায় করার জন্য। কিন্তু আমার সন্তান আমার কোন হক্ব আদায় করেনা। কাজেই আমি তার বিরুদ্ধে আপনার কাছে মামলা দায়ের করলাম। আপনি দয়া করে এটার ব্যবস্থা করে দিন।”
পিতা মামলা দায়ের করা মাত্রই খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সে সন্তানকে ডেকে পাঠালেন। যখন সন্তানকে ডেকে পাঠানো হলো, সন্তান হাযির হলো। হাযির হওয়ার পরে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “হে সন্তান! তুমি তোমার পিতার হক্ব আদায় করনা কেন যথাযথভাবে? মহান আল্লাহ্ পাক তিনি যে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন, মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন সে অনুযায়ী তুমি কেন হক্ব আদায় করনা?” সন্তান বললো, “হে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আমার কিছু কথা আছে। অবশ্যই আমার অপরাধ হলে আমি শাস্তি গ্রহণ করবো, কোন অসুবিধা নেই। তবে আমারও কিছু কথা আছে।” খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “কি কথা তোমার রয়েছে, বল!” তখন সে সন্তান বললো, “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! প্রথম আমার জানার বিষয় হচ্ছে, সন্তানের প্রতি পিতার কি হক্ব রয়েছে? সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার কি হক্ব রয়েছে?” যখন এই প্রশ্ন করা হলো, তখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলে দিয়েছেন যে, সন্তানের কতটুকু হক্ব। পিতার প্রতি সন্তানের তিনটা হক্ব রয়েছে।
এক নাম্বার হচ্ছে, যে কোন পুরুষ, সে এমন মেয়ে বিয়ে করবেন, যে মেয়েটা হচ্ছে পরহেযগার, দ্বীনদার, আল্লাহ্ওয়ালী।
দুই নাম্বার হচ্ছে, সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করবে তখন সে পিতা সন্তানের একটা শরীয়তসম্মত সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখবেন।
তৃতীয় নাম্বার হচ্ছে, সন্তান যখন বড় হবে তখন তাকে দ্বীনি ইল্ম তা’লীম দিবেন। এই তিনটা সন্তানের প্রাপ্য হক্ব পিতার কাছে।”
যখন এটা বলা হলো, তখন সে সন্তান বললো যে, “আপনি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করুন, উনি আমার হক্ব আদায় করেছেন অথবা করেননি।” যখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম সে পিতাকে ডেকে আনলেন যে, “তুমি তোমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছ, এখন তোমার ছেলে তোমার বিরুদ্ধে বলেছে, তুমি তোমার সন্তানের হক্ব আদায় করেছ কিনা?” পিতা চুপ করে রইলো। তখন সন্তান বললো যে, “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম, মূলতঃ আমার পিতা আমার একটা হক্বও আদায় করেননি।
এক নাম্বার হচ্ছে, যিনি আমার মাতা উনি কৃতদাসী। শরীয়তের সাথে উনার কোন সম্পর্ক নেই। ইল্ম-কালাম, আমল-আখলাক বলতে উনার কিছুই নেই।
দুই নাম্বার হচ্ছে, আমার এমন নাম রাখা হয়েছে যা মানুষ শুনলে হাসে।” “নাম কি রাখা হয়েছে?” “নাম রাখা হয়েছে ‘জুল।” ‘জুল’ অর্থ হচ্ছে, ‘গোবরের পোকা।’
তিন নাম্বার হচ্ছে, আমাকে দ্বীনি ইল্ম বলতে কিছুই শিক্ষা দেয়া হয়নি। আমি শরীয়ত সম্পর্কে কিছুই জানিনা। যার জন্য আমার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই পিতা-মাতার হক্ব আদায় করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়না ইত্যাদি। এলোমেলো অনেক কাজই আমার দ্বারা হয়ে থাকে যেহেতু আমার সে বিষয়ে কিছুই জানা নেই। পিতাকে বলা হয়েছিল, আমাকে দ্বীনি ইল্ম দেয়ার জন্য কিন্তু পিতা সে ব্যবস্থা করেননি, যার জন্য আমার পক্ষে হক্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি।” যখন এ কথা বলা হলো, তখন খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মামলা খারিজ করে দিলেন। তিনি বললেন “এই মামলা এখানে চলবেনা। কারণ তুমি সন্তানের হক্ব আদায় করনি অতএব সন্তানও তোমার হক্ব আদায় করবেনা।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পবিত্র নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সবাইকে পিতা-মাতা এবং সন্তানের হক্ব আদায় করার তাওফিক দান করুন

#পিতা_মাতা
#পিতা_মাতার_প্রতি_সন্তানের _কর্তব্য
#পিতা_মাতার_দায়িত্ব
#সন্তানের_সুন্দর _শরীয়ত_সম্মত_নাম


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন