>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১

দরুদ শরীফ পাঠ না করার অপকারীতা

দরুদ শরীফ পাঠ না করার অপকারীতা


খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন:-
"তোমরা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহবানকে এমন মনে করো না । যেমন তোমাদের মাঝে একে অপরকে আহবান করে থাকে ।"(  মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুরা নূর শরীফ :মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে ব্যক্তি আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) উপর পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করতে ভুলে যায় স্মরণ রেখ সে ব্যক্তি বেহেশতের পথ ভুলে যাবে ।"
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে ,সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে ব্যক্তি আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) পবিত্র নাম মুবারক উনার শ্রবণ করে পবিত্র দরুদ শরীফ পড়ে না তার ধবংস অনিবার্য ।"
সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে আরো ইরশাদ মুবারক করেন,"অত্যন্ত জঘণ্য বখিল সেই ব্যক্তি সেই যার সামনে আমার ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারিত হয় অথচ সে পবিত্র দরুদ শরীফে কার্পন্য করে বা পড়ে না ।"
আমীরুল মু'মিনীন ,খলীফাতুল মুসলিম সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ'যম আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন,মুমিনের দোয়া, মুনাজাত ইত্যাদি আসমান-জমিনের মধ্যস্থলে ঝুলে থাকে, যদি তাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ না করে । অর্থাৎ পবিত্র দরুদ শরীফ ব্যতীত ঐ দোয়া কালাম মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হয়না ।"
অন্য হাদীছ শরীফে আছে ,সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জবান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন," যে মজলিশে আমার( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )  প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা হয়না ,সে মুজলিশে যোগদানকারীদের জন্য তা বেহেশতের উছিলা হলেও তাদের জন্য বরই অনুতাপের কারণ হবে ।"
এর তাৎপর্য হলো যে, দ্বীনি ওয়াজ-নছীয়ত ও মাসয়ালা-মাসায়েল আলোচনার কারণে ঐ মজলিশে যোগদানকারীগণ বেহেশত লাভ করবে বটে তবে যেহেতু ঐ মজলিশে পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ হয়নি তাই তারা পূর্ণ মর্যাদার অধিকারী হতে পারবেনা ।
উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা  আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদিন আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উজ্জ্বল চেহারা মুবারকে বিশেষ এক নুরানী আভা অবলোকন করে বললাম , ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!  ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !আপনার চেহারা মুবারক কতই না জ্যোতির্ময় । তখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম !রোজ হাশরে যে ব্যক্তি আমার পবিত্র নূরানী চেহারা মুবারক দর্শনে মাহরুম থাকবে তার জন্য বড়ই অমঙ্গল? তখন উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস বললেন, আমি আরজ করলাম কোন হতভাগা আপনার পবিত্র নূরাণী চেহারা মুবারক দর্শনে মাহরুম থাকবে?  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি ক্পণ। উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস বললেন,ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!  ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !কৃপণ কোন ব্যক্তি?  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,যে ব্যক্তি আমার পবিত্র নাম মুবারক শুনে পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করে না ।"
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে , হযরত কা'ব ইবনে উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু  উনার হতে বর্ণিত । তিনি বর্ণনা করেন যে , একদিন খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল , সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসানীল ,খতামুন্নাবিয়্যীন ,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন , হে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম! আপনারা প্রত্যেকেই মিম্বরের কাছে আসুন । মিম্বরের কাছে হাজির হও । আমরা সকলেই মিম্বরের কাছে হাজির হলাম । খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ,নূরে মুজাসসাম , হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হয়ে একসিঁড়ি  দুই সিঁড়ি , তিন সিঁড়ি করে তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়ালেন । প্রত্যেক সিঁড়িতে উঠার সময় আমীন, আমীন , আমীন বললেন। তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কিছু নছীহত মুবারক করলেন । নছীহত মুবারক শেষ করে আবার নেমে আসলেন । যখন নেমে আমাদের কাছে এসে বসলেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আজকে আমরা এমন কিছু কথা মুবারক আমরা শুনলাম ,যেটা পূর্বে আর কখনও শুনিনি  আপনার পবিত্র জবান মুবারক থেকে । যে, কি শুনেছ? যে,আপনি প্রত্যেক সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় প্রত্যেক সিঁড়িতে আমীন, আমীন, আমীন বলেছেন , এর কি কারণ রয়েছে ? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে দেখ, আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন ঐ ব্যক্তি ধ্বংস (হালাক) যে পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ পেল , কিন্ত নিজের গুনাহখাতা সে ক্ষমা করাতে পারলোনা সে হালাক,সে ধ্বংস। " খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি তখন বললাম, "আমীন।" হ্যাঁ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস , যে পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ পেল অথচ তার গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পারলোনা, সে ধ্বংস ,সে হালাক। এরপর যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন আমি আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস ( হালাক),যে ব্যক্তির সামনে আপনার পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো কিন্তু সে আপনার প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করলোনা , সে ব্যক্তি ধ্বংস,সে হালাক।" আপনি বলুন,"আমীন।" নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্  হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন," আমীন।" হ্যাঁ সে ব্যক্তি ধ্বংস ,সে ব্যক্তি হালাক , যে আমার পবিত্র নাম মুবারক শুনলো অথচ আমার প্রতি পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করলোনা । তৃতীয় যখন আমার পা মুবারক রাখলাম ,তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে আমাকে বললেন ,"হে খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন ঐ ব্যক্তি ধ্বংস (হালাক) যে জীবিত অবস্থায় তার পিতা-মাতাকে পেল অথচ নিজের গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পারলোনা । " খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,আমি তখন বললাম, "আমীন।" হ্যাঁ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস , যে নিজের পিতা-মাতা জীবিত অবস্থায় পেল কিন্তু নিজের গুনাহখাতা ক্ষমা করাতে পেল না সে ধ্বংস,সে হালাক।
এইজন্য ফতওয়া দেয়া হয়েছে-সারা জীবনে একবার পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা ফরজ। আর প্রত্যেক মজলিশের মধ্যে একবার পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। আর প্রত্যেকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।
খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে বেশী বেশী পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করার তাওফিক দান করুন ।
আমীন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন