>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১

দুনিয়ার মায়া যারা ত্যাগ করতে পেরেছেন তাঁরাই কামিয়াবি হাসিল করতে পেরেছেন

 দুনিয়ার মায়া যারা ত্যাগ করতে পেরেছেন তাঁরাই কামিয়াবি হাসিল করতে পেরেছেন


বলখের 'বাদশাহ' এতো বিলাসবহুল জীবনযাপন করতো যে' প্রতিদিন ঘুমানোর সময় পালঙ্কের চারপাশ কাচা ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিতেন। কাচা ফুলের সুবাস ছাড়া বাদশাহ'র ঘুম হতো না।প্রতি দিনের ন্যায় পালঙ্ক সাজানোর পরেও একদিন বাদশাহ'র ঘুম হচ্ছিল না, বাদশাহ দাসী-বান্দিদের বললেন; নিশ্চই আমার পালঙ্কে আবর্জনা আছে! সবাই তন্নতন্ন করে খুজে একটা চুল পেলো! অর্থাৎ একটি চুল বিছানায় থাকার কারনে বাদশাহ'র ঘুম হয়নি। এতেই অনুমান করা যায়' বাদশাহ কতটা আয়েশি ছিলেন।

বাদশাহ একদিন রাজ্য সফর করার সিদ্ধান্ত নিলেন। উজির-নাজির, প্রহরী ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাদশাহ সফরে বের হলেন।প্রতিদিনের মতো দাসী বাদশাহ'র পালঙ্ক কাচা ফুল দিয়ে সাজালেন, সুযোগ পেয়ে দাসী চিন্তা করলেন; প্রতিদিন তো বাদশাহ এই আয়েশি বিছানায় ঘুমায়, আজ যেহেতু বাদশাহ সফরে গেছেন; একটু শুয়ে দেখি কেমন আয়েশ! দাসী শোয়ার সাথে সাথে আরামে ঘুমিয়ে গেলো!এদিকে বাদশাহ কিছুদূর যাওয়ার পর সফরসঙ্গীদের বললেন আজ আর যাওয়া হবেনা, চলো ফিরে যাই। বাদশাহ রাজদরবারে ফিরে এলেন, শয়নকক্ষে গিয়ে দেখেন বাদশাহ'র পালঙ্কে দাসী ঘুমিয়ে আছে! বাদশাহ এই কান্ড দেখে রেগে আগুনমুখা হয়ে সেনাপতিকে ডেকে বললেন, দাসীর ঘুম অবস্থায় চাবুক মারতে থাকুন।প্রথম বেত্রাঘাতেই দাসী চিৎকার দিয়ে উঠলেন, অত:পর দাসী বাদশাহ'র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন, কিন্ত বাদশাহ এতবড় অপরাধ কিছুতেই ক্ষমা করতে নারাজ! অবশেষে শাস্তি হিসেবে দাসীকে পঞ্চাশটি বেত্রাঘাত করার হুকুম করেন বাদশাহ!দাসীকে যখন প্রথম বেত্রাঘাত করা হয়, দাসী তখন কান্নার পরিবর্তে হাসছে! বাদশাহ এই কান্ড দেখে ভাবলেন বেত্রাঘাত বোধহয় আস্তে করা হচ্ছে, বাদশাহ আরও সজোরে বেত্রাঘাত করতে নির্দেশ দিলেন! কিন্ত যতো জোড়ে আঘাত করে, দাসী ততোই হাসছে! বাদশাহ আশ্চর্য হয়ে বেত্রাঘাত বন্ধ করতে নির্দেশ দিলেন।যখন বেত্রাঘাত বন্ধ করা হল, দাসী তখন কাঁদতে শুরু করলেন! বাদশাহ আরও আশ্চর্য হলেন।বাদশাহ এবার দাসীর নিকট জানতে চাইলেনঃ তোমাকে আঘাত করা হলে তুমি কান্নার পরিবর্তে হাসছ! আবার আঘাত বন্ধ করা হলে খুশির পরিবর্তে কাঁদছ; এর কারন কি?দাসী উত্তর দিলেনঃ আমি ভুল করে আপনার শাহী বিছানায় ১০ মিনিট ঘুমিয়েছিলাম, তার অপরাধে ৫০ টি বেত্রাঘাত আমার নছিব হয়েছে; এবং কার্যকর হয়েছে, অর্থাৎ আমার অপরাধের শাস্তি এই দুনীয়ায় হয়ে গেলো! তাই আনন্দে হেসেছিলাম।আর যখন আঘাত বন্ধ করা হলো, তখন আপনার কথা ভেবে কেঁদেছি! কারন, আমার যদি ১০ মিনিট এই বিছানায় ঘুমের জন্য ৫০ টি বেত্রাঘাত নছিব হয়, তাহলে আপনি কত বছর এই বিছানায় ঘুমান? কত কোটি বেত্রাঘাত আপনার নছিবে জমা হয়ে আছে! যেহেতু আপনার নুন খাই; সেজন্য আপনার মায়ায় কেঁদেছি।বাদশাহ'র টনক নড়লেন, দাসী তো সত্যি কথাই বলেছে।দাসীকে জিজ্ঞাস করা হল, তুমি কিভাবে এমন কামিয়াবি অর্জন করলে? দাসী বললেন শাহী বিছানায় শুয়ে কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেনা। আমি সারাদিন আপনার রাজদরবারে কাজ করি, আর সারা রাত আল্লাহ্‌র এবাদত করি।বাদশাহ দাসীর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন, দাসীও ক্ষমা করেন।

বলখের বাদশাহ সেইদিন রাজ্য ত্যাগ করে গহীন অরণ্যে চলে যায়। দুনিয়াবি সমস্ত আরাম-আয়েশ পরিত্যাগ করেন, অত:পর কামিয়াবি হাসিল করেন।

মহান আল্লাহতালা আমাদের সঠিক বুজ দান করুক, এবং দুনিয়াবি মিথ্যা আরাম-আয়েশি জীবনযাপন থেকে রাক্ষা করুক এবং সত্য ও ন্যায়পথে পরিচালিত করুক।

আমিন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন