>

*** শাফিউল উমাম,রউফুর রহীম, রহমাতুল্লীল আলামিন , নুরে মুজাসসাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদে ঈদে আ'যম , সাইয়্যিদে ঈদে আকবর ,কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদে হাবীবি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ফযিলত মুবারক*** *** দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের লাশ মুবারক দ্বিতীয় বার দাফন মুবারক*** *** সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশুদ্ধ তালিকা*** *** আওলাদে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে আর্থিকভাবে খিদমত মুবারকে যারা আঞ্জাম দিবে তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন।***

শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১

কাফিল পাদ্রির ঘটনা


 




হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সময়ে কাফিল নামে এক পাদ্রি ছিলো। যে পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার অনুলিপি তৈরির কাজ করতো। একদিন সে লক্ষ্য করলো, গোটা তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক থেকে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক বেশি আলোচিত হয়েছে। তার মনে হিংসা ও বিদ্বেষ জাগলো। সে মনে মনে ভাবলো, আমাদের নবী হলেন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম, যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলেন। উনার চেয়ে শ্রেষ্ঠ নবী আর কে হতে পারেন? এ চিন্তা মাথায় আসতেই সে গোটা পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্য থেকে লাল কালি দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক কেটে দিলো। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! ওই রাতেই সে গুঁই সাপে পরিণত হলো। এই অবস্থায় যদি কেউ দেখে তাহলে সত্যি গুঁই সাপ ভেবে হয়তো তাকে মেরে ফেলবে, তাই সে তাড়াতাড়ি পাহাড়ের গুহায় যেয়ে আশ্রয় নিলো। ওই গুহার পাশ দিয়েই হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তুর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা মুবারক বলতে যেতেন। এদিকে কাফিল পাদ্রিকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে গেছে। এমনি সময় হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য তুর পাহাড়ে রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে উনার সামনে গুঁই সাপের আকৃতিতে কাফিল পাদ্রি এসে তার পরিচয় দিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক কেটে ফেলার মত জঘন্য ও চরম বেয়াদবীর ঘটনা খুলে বললো। হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কাছে আরজি করলো, তিনি যেন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তার ক্ষমার জন্য সুপারিশ করেন।

গুঁই সাপের আকৃতি ধারণকারী কাফিল পাদ্রির বারবার আরজির কারণে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কাফিল পাদ্রির বিষয়ে জানালেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করা হবে না। তখন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে ইলাহী! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো অনেক বছর পর দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক আনবেন। তাই আপনি দয়া করে সেই পর্যন্ত কাফিল পাদ্রির হায়াত বাড়িয়ে দিন, যাতে সে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দোয়া কবুল করে কাফিল পাদ্রির হায়াত বাড়িয়ে দিলেন। অতঃপর গুঁই সাপটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্ধানে মিশরের সেই তুর পর্বতের পাদদেশ থেকে সুদীর্ঘ সময় ধরে হেঁটে হেঁটে এক সময় কা’বা শরীফ উনার পূর্ব পাশে অবস্থিত আবু কোবায়েছ পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে অপেক্ষা করছিল। যথাসময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক আনলেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি উনার নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ করলেন।

একদা দুপুরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করছিলেন। এ সুযোগে কাফিল গুঁই সাপ পাহাড়ের গুহা থেকে আস্তে আস্তে নেমে ক্ষমা লাভের আশায় আবু জাহিলের বাড়ির সামনে দিয়ে রওয়ানা দিলো। পথিমধ্যে হঠাৎ আবু জাহিলের সামনে পড়ে গেলো কাফিল গুঁই সাপ। আবু জাহিল এটিকে সত্যি গুঁই সাপ মনে করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেললো। অতঃপর এটিকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে ওই ছাই একটি রুমালে নিয়ে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে গিয়ে বললো, হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলুন তো এর মধ্যে কি রয়েছে? যদি বলতে পারেন তাহলে আমি মুসলমান হবো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি না বলে যদি ওই রুমালে যা আছে সেই বলে দেয় এবং আমার নুবুওওয়াত মুবারক উনার সাক্ষ্য দেয় তাতে কি তুমি মুসলমান হবে? আবু জাহিল অকপটে বললো, হ্যাঁ। তাহলে তো মুসলমান হবোই। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রুমালে বাঁধা ছাইকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, কুম বিইযনিল্লাহি ইয়া কাফিল! সাথে সাথে কাফিল জিন্দা হয়ে রুমাল থেকে লাফ দিয়ে যমীনে পড়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বদম মুবারক-এ ক্ষমা চাইতে লাগলো এবং কালীমা শরীফ পাঠ করলো “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। আবু জাহিল ভয়ে দৌড়ে দূরে গিয়ে বলতে লাগলো, আপনার মতো যাদুকর আমাদের দেশে আর একজনও নেই। নাউযুবিল্লাহ! উক্ত কাফিল পাদ্রী নিজ অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে নাজাত পেয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন